মোঃ সাজেল রানা, দৈনিক আমার বাংলাদেশ প্রতিনিধিঃ
পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম ডিজিটাইজেশন ও নাগরিক সেবার গতিশীলতা বৃদ্ধিতে চারটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য *‘পুলিশ কমান্ড অ্যাপ’, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে **শর্টকোড সেবা, অভিযোগ ব্যবস্থাপনায় **ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সফটওয়্যার* এবং অনলাইনে *জিডি-এফআইআর* করার সুবিধা। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এসব উদ্যোগের বিস্তারিত ঘোষণা দিয়েছেন।
১. পুলিশ কমান্ড অ্যাপ: যোগাযোগে নিরাপত্তা ও দক্ষতা*
পুলিশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সময়ানুবর্তিতা বাড়াতে তৈরি হচ্ছে বিশেষ অ্যাপ। বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে তথ্য পাচার ও সময়ক্ষেপণের ঝুঁকি থাকায় আইসিটি বিভাগ এই অ্যাপ তৈরির কাজ শেষ করেছে। এতে তিনটি স্তরে কর্মকর্তাদের সংযুক্ত করা হবে:
– *টিয়ার-১:* আইজিপি ও শীর্ষ কর্মকর্তারা।
– *টিয়ার-২:* পুলিশ হেডকোয়ার্টার, রেঞ্জ ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
– *টিয়ার-৩:* থানা পর্যায় (বর্তমানে সংযুক্ত নয়)।
অ্যাপটির প্রোটোটাইপ তৈরি সম্পন্ন হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে উন্নয়ন চলমান বলে জানান তৈয়্যব।
—
*২. নারী নির্যাতন প্রতিরোধে শর্টকোড ও নারী অপারেটর*
নারীরা যাতে নিরাপদে সহিংসতার অভিযোগ জানাতে পারেন, সে লক্ষ্যে চালু হবে বিশেষ *৪ ডিজিটের শর্টকোড। কল সেন্টারে শতভাগ নারী স্টাফ নিয়োগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমান জাতীয় হেল্পলাইনের পাশাপাশি এই নতুন সেবা যুক্ত হবে। তবে জীবন রক্ষাকারী সেবা **৯৯৯*-এ একীভূত করা হচ্ছে না, কারণ এর ক্যাপাসিটি বাড়ানো সময়সাপেক্ষ।
*৩. অনলাইনে জিডি-এফআইআর ও স্বয়ংক্রিয় রাউটিং*
অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং এফআইআর করার প্রক্রিয়া সহজ করা হচ্ছে। অভিযোগ দাখিলের পর কল সেন্টার থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য পৌঁছে যাবে। এ জন্য থানার কর্মকর্তাদের ফোন নম্বরের ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি, *ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সফটওয়্যার*-এর মাধ্যমে প্রতিটি অভিযোগের অগ্রগতি রিয়েল-টাইমে মনিটরিং করা সম্ভব হবে, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
*৪. ‘পুশ টু টক’ অ্যাপ: হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প*
তথ্য পাচার রোধে আইসিটি বিভাগ তৈরি করছে *‘পুশ টু টক’* নামের একটি নিরাপদ যোগাযোগ অ্যাপ। বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য কপির ঝুঁকি থাকলেও নতুন অ্যাপে এনক্রিপ্টেড যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে।
—
*কারিগরি সহায়তা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:*
উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগ পূর্ন ফোকাশ দিচ্ছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদান ত্বরান্বিত হলে পুলিশের কাজের চাপ কমবে এবং নাগরিকদের সন্তুষ্টি বাড়বে। ইতোমধ্যে কমান্ড অ্যাপের টেস্টিং চলছে এবং শর্টকোড সেবা কয়েকদিনের মধ্যেই চালু হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।