২৪শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ডিমলায় পাঠদানের সময় ছাদের বীম ধসে আহত হয়েছেন এক শিক্ষিকা ও তার নয় মাসের শিশু সন্তান

মোঃ বাদশা প্রামানিক নীলফামারী প্রতিনিধি:
ডিমলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানের সময় সময় জোরাজির্ণ ভবনের ছাদের বীম ধসে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক শিক্ষিকা ও তার নয মাসের শিশু সন্তান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ধসে ওরা শব্দের বাচ্চারা আতঙ্কিত হয়ে দূরে বেরিয়ে আসে। এই ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আহত শিক্ষিকার নাম রেহানা পারভীন (৩২)। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার ছেলে সাদাত হোসেনের বয়স নয় মাস। মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় রেহানা পারভীনকে প্রথমে জলঢাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর শিশু সাদাত হোসেন সুস্থ রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগেও ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল।

স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৮সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর টিনশেড ভবনে কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চার কক্ষবিশিষ্ট একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে। তবে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ভবনের বিভিন্ন অংশের প্লাস্টার খসে পড়ছে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দিলেও নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আজ সকাল দশটার দিকে শিক্ষিকা রেহানা পারভীন অফিস কক্ষে তার সন্তানকে কোলে নিয়ে পরিচর্যা করছিলেন। এ সময় জানালা বন্ধ করতে চেয়ার থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই হঠাৎ ছাদের বীম ধসে তার মাথায় পড়ে। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তার নয় মাস বয়সী ছেলেও আঘাত পেয়েছে। অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন বাকী শিক্ষকগন। এর আগেও প্লাস্টার খসে পড়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে খবর পেয়ে পরিদর্শনে আসা নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি বলেন, “আমরা খুব শিগগিরই ওই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব। পরিদর্শনের পর ঝুঁকিপূর্ণ দুটি কক্ষে আপাতত অফিস ও পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।’

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top