১লা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

“পড়তে হবে, পড়ার মতো” – নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে বই পড়ার গুরুত্ব!

আব্দুল মাবুদ মোহাম্মদ ইউসুফ, মুতায়াল্লীম: দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা

আজকের যুগে প্রযুক্তি ও ডিজিটাল মাধ্যমের আধিপত্য থাকা সত্ত্বেও বই পড়ার গুরুত্ব একেবারেই কমে যায়নি। বিশেষত, যে প্রজন্মটি এখন ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে বড় হচ্ছে, তাদের কাছে বই পড়ার অভ্যাস একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, “পড়তে হবে, পড়ার মতো” এই স্লোগানটি নতুন করে জাগিয়ে তুলছে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ।

সম্প্রতি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন থেকে বই পড়ার গুরুত্ব নিয়ে নানা ধরনের প্রচারণা শুরু হয়েছে। “পড়তে হবে, পড়ার মতো” শিরোনামে নতুন একটি উদ্যোগ সম্প্রতি জনমনে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে সামনে এসেছে। যদিও এটি কোনো আয়োজিত ক্যাম্পেইন নয়, তবে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টি করার মতোই একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিজিটাল দুনিয়া কিংবা গ্যাজেটসের দাপটে তরুণ প্রজন্মের বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তবে, বই পড়ার অভ্যাস মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। একে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে দেখতে হবে।

এ বিষয়ে মনোবিদরা বলেন, “পড়ার অভ্যাস শুধুমাত্র জ্ঞান অর্জনই নয়, এটি মানুষের মনের শান্তি, সৃজনশীলতা এবং সৃজনশীল চিন্তা শক্তির বিকাশ ঘটায়।” বিশেষত, এটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রসারিত করে এবং একটি সৃজনশীল সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

অনেকে বলছেন, প্রযুক্তির যুগে হারিয়ে যাওয়া এই পাঠক সমাজকে আবারও সচেতন করতে হবে। বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সামাজিক প্রচার এবং বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ আয়োজন করা যেতে পারে, যা যুবসমাজকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করবে। এর মাধ্যমে যে কোনো পেশার মানুষও নতুন জ্ঞান এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি লাভ করতে পারবে, যা তাদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে।

বই পড়ার এই উজ্জ্বল ধারণা অবশেষে সেলফি-র মত ডিজিটাল ফরম্যাটেও জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। অনেকেই এখন বই পড়ার সময় তাদের সেলফি তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করছেন। সেলফি তুলে বইয়ের প্রতি আগ্রহের এই অনন্য প্রচারণা যেন তরুণ প্রজন্মকে বইয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে বড় ভূমিকা পালন করছে।

অতএব, সময় এসেছে বইয়ের প্রতি আগ্রহ ফিরিয়ে আনার এবং ডিজিটাল দুনিয়ার বাইরেও বই পড়ার অভ্যাসকে প্রাধান্য দেওয়ার। “পড়তে হবে, পড়ার মতো” এখন সময়ের চাহিদা।

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একমাত্র পথ ইসলাম

লেখক: মাওলানা আসগর সালেহী মে দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস: মে দিবস, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয় প্রতি বছর ১ মে। এর সূচনা ১৮৮৬ সালের

তাকওয়া: আত্মগঠনের মূল চাবিকাঠি ও সমাজকল্যাণের ভিত্তিপ্রস্তর!

শাহেদ ইবনে ইউনুস, মুতায়াল্লীম: দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা, ঢাকা ইসলামী চিন্তাধারার মৌলিক ভিত্তিসমূহের মধ্যে “তাকওয়া” এমন একটি অনন্য গুণ, যা ব্যক্তির আত্মা, চিন্তা, আচরণ, ও

মুখে ইসলাম, মনে ষড়যন্ত্র – নেতৃত্ব নয়, এ যেন ধর্মের বেইমানি

লেখক জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান ইসলাম আজ আমাদের পোস্টারে আছে, কিন্তু চরিত্রে নেই। আছে মিছিলে, কিন্তু নেই মননে। ইসলাম যেন এখন এক রাজনৈতিক টুল—যার কাজ

Scroll to Top