আসগর সালেহী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
বাংলাদেশে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম কিংবদন্তি আলেম, চট্টগ্রামের দারুল মাআরিফ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক আল্লামা সুলতান যওক নদভী (রহ.)-এর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হাফিজাহুল্লাহ।
শনিবার (৩ মে ২০২৫) দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
এ মৃত্যুতে পাঠানো এক শোকবার্তায় আমিরে হেফাজত বলেন, “আজকের এই রাতে প্রিয় ভাই আল্লামা সুলতান যওক নদভী আমাদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। এক সপ্তাহ পূর্বে আমি তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তাঁর সাথে সালাম-মুসাফাহা হয়। মনে হলো, তিনি যেন শেষবারের মতো অনেক কিছু বলতে চাচ্ছিলেন। এটাই ছিল তাঁর সঙ্গে জীবনের শেষ সাক্ষাৎ।”
শোকবার্তায় আমিরে হেফাজত বলেন, আল্লামা সুলতান যওক নদভী ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের সভাপতি, জামেয়া দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও মহাপরিচালক এবং বিশ্ব মুসলিম লিগের বাংলাদেশ শাখার প্রধান। আরবি ভাষায় দক্ষতা ও সাহিত্যিক অবদানের জন্য তিনি দেশ-বিদেশে সমাদৃত ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, “আল্লামা যওক নদভী (রহ.) ছিলেন পটিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা কুতুবে জামান আল্লামা মুফতী আজিজুল হক (রহ.)-এর হাতে গড়া ছাত্র। আমরা কিছুদিন একসঙ্গে পটিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছি। মুফতী সাহেব হুজুরের কাছ থেকে হেদায়া পাঠ নিয়েছি। তিনি দীর্ঘদিন জামিয়া বাবুনগরীতে হাদিস, তাফসির, ফিকহ, আরবি সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকতা করেছেন। পরবর্তীতে দারুল মাআরিফ আল ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠা করে সেখানে শায়খুল হাদিস ও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।”
ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে আমিরে হেফাজত বলেন, “আধ্যাত্মিক জগতে তিনি আমার পিতা আল্লামা শাহ হারুন বাবুনগরী (রহ.)-এর বিশিষ্ট খলীফা ছিলেন। জামিয়া বাবুনগরী এবং আমাদের পরিবারের সাথে ছিল গভীর সম্পর্ক। দেশের একজন দরদি রাহবর, শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি এবং ইসলামী জ্ঞানের রত্নকে হারাল দেশ। এই শূন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়।”
পরিশেষে আমিরে হেফাজত আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।