জহিরুল ইসলাম, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার ১ নং উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অভিযোগ এনে ৭২ ঘন্টার মধ্যে তার অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। ৪ মে রোজ রবিবার মহিষখলা বাজারে বিকাল ৫ ঘটিকায় উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও জনসাধারণের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও জনসাধারণ চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ সবুজ মিয়া, ৯নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান, ১নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল মোতালেব, ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ আমিনুল ইসলামসহ উপস্থিত জনতা।
মানবন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদার একজন দূর্নীতিবাজ, আত্মসাৎকারী ও জনবিচ্ছিন্ন চেয়ারম্যান। বিভিন্ন সময় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ৭২ ঘন্টার ভিতরে এই দূর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবি জানান উপস্থিত বক্তারা।
২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোঃ সবুজ মিয়া বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদার একজন জনবিচ্ছিন্ন চেয়ারম্যান ও জনসাধারণ ওনার কাছ থেকে ঠিকমতো নাগরিক সেবা পায় না। ওনি বেশিরভাগ সময় নেত্রকোনা থাকেন। তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়মের সাথে জড়িত।
৫ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বক্তব্যে বলেন, বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একজন দূর্নীতিবাজ লোক। আমার ওয়ার্ডে এক সময় একজন ভুক্তভোগীর চাল আত্মসাৎ করে নূরনবী তালুকদার। তখন ওই ভুক্তভোগী উক্ত ওয়ার্ডের আমি ইউপি সদস্য হওয়ায় আমি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। দীর্ঘদিন মামলা পরিচালনা করে আমি নির্দোষ হই। আর ওই মামলা ধামাচাপা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাগজপত্রে চেয়ারম্যান আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলে। স্বাক্ষর না দেয়ায় পরবর্তীতে দলীয়প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘ আড়াই বছর আমাকে পরিষদে যেতে দেয় নি। তাছাড়া উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নে কার্তিকপুর ও আন্তরপুর রাস্তায় একটি বাঁশের ফেরিঘাট রয়েছে অতীতে নানা সময়ে এই ফেরিঘাটে চলাচল করতে কোনো টাকা দিতে হতো না। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদার হওয়ার পর প্রভাব খাটিয়ে এলাকার জনগণের কাছ থেকে ফেরিঘাটের পারাপার হওয়ার নামে টাকা তোলে। আমরা নানা সময় টাকা তোলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েও সুরাহা পাইনি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের গভীর নলকূপের টাকা আত্মসাৎ করে এই চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান নূরনবী তালুকদারের ফোনে বারবার চেষ্টা করেও ওনার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ হয় নি। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাত জন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি স্বারকলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল রায় এর কাছে প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান অভিযোগ পেয়েছি তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।