কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়াদ্দারকে সাময়িক বরখাস্তকে কেন্দ্র করে একাধিক অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয়ের পরিবেশ। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, নিয়মনীতি উপেক্ষা করে একটি পক্ষ তাঁকে জোরপূর্বক অপসারণের চেষ্টা চালিয়েছে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।
প্রধান শিক্ষক দিলারা ইয়াসমিন জোয়াদ্দার বলেন, ১৫ এপ্রিল তিনি এসএসসি ২০২৫ পরীক্ষার সহকারী কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নির্দেশে তাঁর অফিস কক্ষে তালা লাগানো হয়েছে। তিনি মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন।
পরদিন ১৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ে আলোচনার একপর্যায়ে, প্রধান শিক্ষকের দাবি অনুযায়ী, কয়েকজন শিক্ষক ও বহিরাগতদের একটি দল তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে ইএফটি সংক্রান্ত বেতন জটিলতা নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর মোবাইল, ভ্যানিটি ব্যাগ ও নথিপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপস্থিত হয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ইএফটি-ভিত্তিক বেতন প্রদান পদ্ধতি নতুন চালু হওয়ায় শিক্ষকগণ নিজেরাই তথ্য অনলাইনে আপলোড করেন। সেই তথ্যে ভুল থাকায় বেতন প্রদানে সমস্যা দেখা দেয়। প্রধান শিক্ষক হিসেবে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না বলে জানান দিলারা ইয়াসমিন।
এদিকে, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদের স্বাক্ষরে ২৪ এপ্রিল একটি সাময়িক বরখাস্তের চিঠি ইস্যু করা হয়, যা প্রধান শিক্ষক ২৮ এপ্রিল হাতে পান। দিলারা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, এটি একটি পূর্ব-পরিকল্পিত এবং ব্যক্তিগত আক্রোশপ্রসূত সিদ্ধান্ত, যা বিধিবহির্ভূত ও নিয়ম লঙ্ঘন করে গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ও সভাপতির বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তাঁদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি হালনাগাদ করা হবে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে ২১ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
প্রধান শিক্ষক সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রার্থনা করেছেন।