নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাকিস্তান ও দেশটির অধিকৃত কাশ্মীর অঞ্চলে নয়টি স্থাপনায় ভারতের বিমান হামলার পরপরই প্রকাশ্যে এসেছে ইসরাইলের সমর্থন। ভারত এই সামরিক অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিন্দুর’। বুধবার এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রেউভেন আজার বলেন, সন্ত্রাসীদের বোঝা উচিত, জঘন্য অপরাধের পর তাদের জন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই। তিনি আরও বলেন, ইসরাইল ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে পূর্ণ সমর্থন করে।
ভারতের এই হামলা মঙ্গলবার দিবাগত রাতে চালানো হয়। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। সেই ঘটনার পরই ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে এ হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে ইসলামাবাদ সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারতের ভেতরেও হামলার ধরন ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দল কংগ্রেস দাবি করেছে, ওই হামলার তিন দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদি গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, অপারেশনটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে সীমিত পরিসরে চালানো হয়েছে, যাতে লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র জঙ্গি ঘাঁটি। এ হামলার লক্ষ্যবস্তুতে কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনা ছিল না।
এদিকে ইসরাইল ভারতের পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানালেও ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে তুরস্ক। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দারকে ফোন করে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ভারতের এ হামলাকে ‘অপ্রস্তুত আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, তুরস্ক পাকিস্তানের পাশে থাকার অঙ্গীকার জানায় এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। দুই দেশ পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নয়া দিল্লি দাবি করেছে, অপারেশন সিন্দুর ছিল সুনির্দিষ্ট ও নিয়ন্ত্রিত, যা উত্তেজনা না বাড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের এই পদক্ষেপ মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
এই হামলা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এটি সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা এখনই এ বিষয়ে শুনেছি। অতীতে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল যে এমন কিছু হতে পারে। কারণ উভয় পক্ষই বহু বছর ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই উত্তেজনা খুব দ্রুতই শেষ হবে।
পাকিস্তানে হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক এক বিবৃতিতে জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারত যে সামরিক অভিযান চালিয়েছে, তা নিয়ে মহাসচিব উদ্বিগ্ন। তিনি উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।