নিজস্ব প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগের শাসনামলে টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আবদুল হামিদের দেশত্যাগের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর মধ্যেই শেখ হাসিনার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের গড়ে তোলা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার (৯ মে) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস উইং থেকে এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এই দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।”
সরকারি বিবৃতিতে আরও জানানো হয় যে, এই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, “আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে।”
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “আন্দোলনরত দলগুলোকে ধৈর্য ধারণ করতে বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার জনদাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রচলিত আইনের অধীনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে।”
এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন সম্পর্কে জনমনে যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, সরকার তা অবগত রয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।”
রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট হওয়ার পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।