নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আকস্মিক দেশত্যাগ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে তীব্র সমালোচনা। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অফিস থেকে ফোনকল পেয়ে বিমানবন্দরে আটকানো সত্ত্বেও আবদুল হামিদকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আবদুল হামিদকে বিমানবন্দরে আটকানো হলো, তারপর নাকি চুপ্পুর অফিস থেকে ফোনকল পেয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। এরপরও কি ইন্টেরিমকে জুলাই বিপ্লবীরা সাপোর্ট করে যাবে!!! স্যরি, হয় চুপ্পুকে সরান-লীগকে ব্যান করেন, আর না হয় নিজেরা সরে যান।”
সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে সহযোগিতার অভিযোগে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। পরে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, “সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে যথাযথ জবাব, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং ডামি রাষ্ট্রপতিকে ফিরিয়ে আনতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সসম্মানে চেয়ার ছাড়তে হবে। অন্যথায় সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যার জন্য দায়ী থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।”
আবদুল হামিদকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনার পর ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, “ছাত্র উপদেষ্টা স্যারেরা, হামিদকে ছেড়ে দেওয়ার দায়ে আপনারা তিনদিনের মধ্যে পদত্যাগ করুন। এরপর আমরা ইন্টেরিমের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব। হয় গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিস্ট লীগ নিষিদ্ধ হবে, নয়তো ইন্টেরিম বিদায় নেবে।”
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনারা যদি সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের কাতারে আসেন, সম্মান পাবেন। আর যদি চেয়ার ছেড়ে দিতে কান্না পায়, তাইলে এরপর থেকে আপনাদের ‘তুই’ বলা শুরু হবে! সাথে বঙ্গীয় গাইল।”
কিশোরগঞ্জ ব্যুরোর প্রতিবেদনে জানা গেছে, মামলা থাকার পরও আবদুল হামিদ ও তার শ্যালক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের প্রভাবশালী নেতা ডা. নওশাদ খানের দেশত্যাগ ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই প্রশ্ন—মামলার আসামি হয়েও কীভাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়লেন?
সাবেক এই রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এখন দেখার পালা, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামের পর পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়।