নিজস্ব প্রতিবেদক:
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ভারতীয় আগ্রাসনের জবাবে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ চালিয়ে সফলভাবে প্রতিশোধ নিয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
রোববার (১১ মে) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আইএসপিআর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, এই অভিযানে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ ভারতের মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে।
তিনি বলেন, “৬ ও ৭ মে রাতের কাপুরুষোচিত হামলায় আমাদের নিরীহ নাগরিক নিহত হন। জাতিকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস চালিয়ে আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি।”
আইএসপিআর মহাপরিচালক জানান, অভিযানে ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। ধ্বংস করা হয় দুটি এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ভূপাতিত করা হয় ৮৪টি ভারতীয় ড্রোন।
তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধ মানেই আগুন নিয়ে খেলা, বিশেষ করে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের জন্য। পাকিস্তান কখনো আগ্রাসন শুরু করে না, তবে জবাব হয় প্রতিশোধমূলক ও চূড়ান্ত।”
কাশ্মীর ইস্যুতে ফের সরব পাকিস্তান
আইএসপিআর ডিজি বলেন, “কাশ্মীর দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির চাবিকাঠি। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই বিরোধের সমাধান ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়।”
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
নৌ ও বিমান প্রতিরক্ষায় দৃঢ় অবস্থান
পাকিস্তান নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রব নওয়াজ বলেন, শত্রু সংখ্যায় শক্তিশালী হলেও, সমুদ্র সীমান্ত সাহসিকতার সঙ্গে রক্ষা করেছে পাকিস্তান।
এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব জানান, পাকিস্তান বিমান বাহিনী সময় ও স্থানের পছন্দ অনুযায়ী আঘাত করেছে। উধমপুরে ভারতের এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসই তার বড় উদাহরণ।
যুদ্ধবিরতির দাবি ভারতের পক্ষ থেকেই এসেছে
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ পাকিস্তান করেনি, করেছে ভারতই।”
তিনি বলেন, পাকিস্তানের হাতে কোনো ভারতীয় পাইলট নেই—এই বিষয়ে ছড়িয়ে পড়া খবর ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব’।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি
এর আগে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে, দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে এলেও, আঞ্চলিক উত্তেজনা ও কাশ্মীর ইস্যুকে ঘিরে অস্থিরতা যে এখনও বিদ্যমান, তা স্পষ্ট।