নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি ড্রোন ও বিমান হামলায় অন্তত ২৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আটজন শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু, চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনীর হামলার মূল লক্ষ্য ছিল বেসামরিক জনগণ ও আশ্রয়প্রার্থীরা।
মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় একাধিক হামলা
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে সাধারণ জনগণের ওপর ড্রোন হামলায় দুজন নিহত ও অনেকে আহত হন। একই শহরে আরও একজন ড্রোন হামলায় এবং অপর একজন আগের হামলায় আহত হয়ে মারা যান।
দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে আশ্রয়প্রার্থীদের তাবু লক্ষ্য করে চালানো হামলায় বাবা-ছেলে নিহত হয়েছেন। শহরের পশ্চিমাংশে আরেকটি তাঁবুতে হামলায় দুই শিশুসহ চারজন নিহত হন।
আল-মাওয়াসি ও আসদা এলাকার দুটি পৃথক তাঁবুতে হামলায় আরও চারজন প্রাণ হারান, যাদের মধ্যে ছিল দুই শিশু। একই এলাকায় আরেকটি তাবুতে হামলায় নিহত হয় আরেক শিশু। এছাড়া সাইকেলের ওপর ড্রোন হামলায় এক তরুণ প্রাণ হারান।
গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা অব্যাহত
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব খান ইউনিসের আবাসান আল-কাবিরা শহরে ইসরাইলি বাহিনী তীব্র গোলা ও গুলিবর্ষণ চালায়। গাজা শহরে গোলাবর্ষণে এক শিশুর মৃত্যু হয় এবং উত্তরের জাবালিয়ায় একজন গুরুতর আহত হন।
খান ইউনিসে একটি গাড়িতে বিমান হামলায় চারজন নিহত হন। গাজা শহরে আরেকটি হামলায় পাঁচজন নিহত হন, যাদের মধ্যে একটি মেয়ে শিশুও ছিল।
গাজা শহরের আল-তুফাহ এলাকায় বিমান হামলায় একাধিক আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়েছে। একই সঙ্গে জাবালিয়ার ওল্ড গাজা স্ট্রিটে একটি মসজিদেও বিমান হামলা চালানো হয়, যেখানে দুজন আহত হন।
ব্যাকগ্রাউন্ড: দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত ও সাম্প্রতিক আগ্রাসন
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজারের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও, তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১৮ মার্চ থেকে ফের শুরু হওয়া আগ্রাসনে ইতোমধ্যে আরও ২৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন সাত হাজারের বেশি।
গাজায় ক্রমবর্ধমান এই সহিংসতা আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।