আরাফাত হোসাইন, বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধার্তে এবং রিকশা চালকদের জন্য ন্যায্যমূল্য বিবেচনায় নিয়ে প্রশাসন কর্তৃক নির্দিষ্ট ভাড়ার চার্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত এবং অযৌক্তিক ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রিকশা চালকদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) এমনই ভোগান্তিতে পড়েন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের এক শিক্ষার্থী মো. সোহান।
সোহান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কে. আর, মার্কেট হতে শেষ মোড় পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারিত হলেও আমার কাছে দ্বিগুণ ভাড়া ২০ টাকা দাবি করে রিকশা চালক। কিন্তু এইটুক পথ মোটেও ২০ টাকার ভাড়া নয়। তাই প্রশাসন যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরণে চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট রিকশার ব্যবস্থা করে তাহলে আমরা এই ভোগান্তি থেকে সহজেই মুক্তি পাবো।
এদিকে অভিযুক্ত রিকশাচালক মো. নীরব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটি আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ময়মনসিংহ শহরে এইটুকু রাস্তার ভাড়া আমরা সর্বনিম্ন ২০ টাকা রাখি। আপনারা রিকশায় উঠার আগে ভাড়া মিটিয়ে উঠবেন।
জানা যায়, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে রিকশা ও অটো ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু রিকশা চালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় অনেক সময়ই ভাড়া নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, প্রশাসনের পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবেই ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়ার পরেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এর আগে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে কে. আর, মার্কেট হতে প্রশাসনিক ভবন, টি.এস.সি, হেলথ কেয়ার সেন্টার, করিম ভবন, ঈশা খাঁ হল, শহীদ জামাল হোসেন হল, শেষ মোড়, শহীদ নাজমুল আহসান হল, আশরাফুল হক হল, শহীদ শামসুল হক হল, কৃষি সম্প্রসারণ ভবন পর্যন্ত রিকশায় ভাড়া ১০ টাকা ও অটোতে ভাড়া ৫ টাকা। বাকৃবির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওই ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মো. মুরসালিন বলেন, ময়মনসিংহ শহরে চলাচলে প্রচুর জানজট মোকাবিলা করতে হয়। এক জায়গাতেই অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনো জানজট নেই। প্রশাসন নির্ধারিত ভাড়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্থান থেকে দুরত্বও পরিমাপ করেই দিয়েছে। তাই রিকশাচালকদের শহরের সাথে তুলনা করে ভাড়া চাওয়া অমূলক।
এই বিষয়ে বাকৃবির সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই বর্তমান প্রশাসন ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রিকশা ও অটো ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও অনেক রিকশা ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাড়া নিয়ে ঝামেলা করে। ক্যাম্পাসের মধ্যেই যারা নিয়মিত রিকশা চালায় তাদেরকে আরও মোটিভেট করার চেষ্টা করবো। তবে অনেক সময় বৃষ্টি বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় রিকশা ভাড়া বেশি চাওয়া হয়, শিক্ষার্থীদেরও সেই সময় মানবিক হতে হবে। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক তাই আমরা রিকশা চালকদের সাথে আলোচনা করে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে অতি শীঘ্রই বিষয় জোরালোভাবে সমাধান করবো।