রিফাজ বিশ্বাস লালন, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি:
ঈশ্বরদীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে চেয়ার তুলে’ ও ’স্যান্ডেল উঁচিয়ে’ মারতে উদ্যত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলেরই এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এসব ‘উদ্ধত আচরণ’, সরকারি চাকুরি বিধিমালা লঙ্ঘন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মো. পারভেজ রেজা। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মোছা. লতিফা আক্তার। তিনি উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযোগ তদন্তে মানিকনগর ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বেলাল হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, উপপরিচালক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট। ২০২৪ সালেও শিক্ষক লতিফা আক্তারের বিরুদ্বে অভিযাগ দেওয়া হয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট।
আজ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।
অপরদিকে পাল্টা হিসেবে সহকারী শিক্ষক লতিফা আক্তার উপজেলা শিক্ষা অফিসে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দিয়েছেন। দুটি অভিযোগই তদন্ত করছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
এ অফিস সুত্রে জানা গেছে, অসৌজন্য আচরণ, উদ্ধত ব্যবহার, বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে না আসা, শিশু জরিপ কাজের এলাকা ভাগ করে দিলেও তার অংশের জরিপ না করা, জাতীয় দিবসে অনুপস্থিত থাকা, অফিস কক্ষে মারমুখী আচরণসহ নানা অভিযোগ এনে চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ৫ মে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই শিক্ষা উপজেলা অফিসার উভয়কেই শান্ত থাকার নির্দেশ দেন এবং অভিযোগ তদন্তের জন্য মানিকনগর ক্লাস্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বেলাল হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহীনা আক্তার জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ইতিমধ্যে খোঁজখবর নিয়েছেন। ঘটনাটি যেন আর বেশি দুর না আগায় সেজন্য সহকারী শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর সহকারী শিক্ষক লতিফা আক্তার অফিসে যোগাযোগ করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পারভেজ রেজা জানান, সহকারি শিক্ষক প্রায় সময় সরকারি বিধিমালা না মেনে স্কুলে আসেন, দেরিতে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বিধিমালা অনুযায়ী অফিস প্রধানের পরামর্শ মানে না। বরং নিষেধ করলেই তাকে ’যাচ্ছেতাই’ রাগারাগি করেন। এমন কি তাঁকে অফিস কক্ষের ভেতর চেয়ার ও সেন্ডেল তুলে মারতে উদ্যত হন। বিষয়গুলো নিয়ে তিনি যথারীতি উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন দপ্তরে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন। এ কারণে তাকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী শিক্ষক লতিফা আক্তার বলেন, “আমার বিরুদ্ধে সবগুলোই মনগড়া অভিযোগ করেছেন প্রধান শিক্ষক পারভেজ রেজা। এমন কি আমাকে হেনস্থা করার জন্য তিনি ’স্যারদের ম্যানেজ’ করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আমিও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি।