১৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

রাজস্ব খাতের দুর্বলতায় অর্থনীতি ঝুঁকিতে, তবে সংস্কারে সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বহিঃখাতের ভারসাম্য উন্নতি পেলেও রাজস্ব খাতের দুর্বলতা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) পুনর্গঠন, পৃথক রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন এবং ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হলে অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত “মাসিক ম্যাক্রোইকোনমিক ইনসাইটস (এমএমআই)” প্রথম সংস্করণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে পিআরআই-এর সেন্টার ফর ম্যাক্রোইকোনমিক অ্যানালাইসিস (সিএমইএ), অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের (ডিএফএটি) সহায়তায়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার। প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. মো. হাবিবুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনের ডেপুটি হেড অব মিশন ক্লিনটন পবকে এবং সেকেন্ড সেক্রেটারি জোশুয়া গাকুটান।

ড. আনিসুজ্জামান বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য নীতির সামঞ্জস্য ও সামাজিক মূলধনের সমন্বয় জরুরি। এলডিসি থেকে উত্তরণের এই সময়কে কাজে লাগিয়ে সরকার সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ভাসমান বিনিময় হার পদ্ধতি চালুর ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। রিজার্ভ ও অর্থ প্রবাহের অবস্থা বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত।

পিআরআই চেয়ারম্যান ড. সাত্তার বলেন, দেশের রপ্তানি কাঠামো অতিমাত্রায় পোশাকনির্ভর এবং সুরক্ষামূলক শুল্কনীতি রপ্তানি-বান্ধব নয়। বহুমুখীকরণ না হলে টেকসই প্রবৃদ্ধি সম্ভব নয়।

মূল প্রবন্ধে পিআরআই-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান বলেন, বহিঃখাতে ভারসাম্য ফিরে এলেও রাজস্ব খাতের দুর্বলতা পুনরুদ্ধারকে ঝুঁকিপূর্ণ করছে। মার্চ সংস্করণ অনুযায়ী, দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিডিপির মাঝারি উন্নয়ন হয়েছে এবং রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ শক্তিশালী হলেও রাজস্ব সংগ্রহে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে খেলাপি ঋণ দ্রুত বাড়ছে। পদ্ধতিগত দুর্বলতা, অর্থপাচার এবং নিয়ন্ত্রণহীনতা থাকলে চলতি অর্থবছর শেষে খেলাপি ঋণ ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তবে বক্তারা আশাবাদী, যথাযথ সংস্কার কার্যকর করা হলে বাংলাদেশ অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

জিআই স্বীকৃতি নিয়ে ভোলার মহিষের দুধের টক দই অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনায়

খন্দকার নিরব, ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহিষের দুধের কাঁচা টক দই এবার জিআই বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি সনদ পেল। এতে খুশি মহিষ

শেয়ারবাজারে কারসাজির দায়ে সাকিব আল হাসানকে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক ও জাতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে শেয়ারবাজারে কারসাজির দায়ে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ

২০২৫-২৬ বাজেট হবে ঋণের দুষ্টচক্র ভাঙার, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনে জোর

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেট হবে ঋণনির্ভরতা কমিয়ে বাস্তবভিত্তিক অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের প্রারম্ভ। দেশি ও বৈদেশিক উভয় ঋণের চাপ থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার প্রয়াসেই

ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক রক্ষায় সরকার নিয়ে এল ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ ২০২৫’

নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সরকার সম্প্রতি ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে একটি নতুন আইন জারি করেছে। এ অধ্যাদেশের আওতায় প্রয়োজন হলে কোনো

Scroll to Top