নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের মণিপুর রাজ্যে মিয়ানমার সীমান্তে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলসের গুলিতে অন্তত ১০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। ভারতের দাবি, তারা মিয়ানমারের সাগাইন অঞ্চলের পিপলস ডিফেন্স টিম (পিডিটি)-এর সদস্য এবং সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। তবে মিয়ানমারের স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দাবি, ঘটনাটি সীমান্তের ওপারে, অর্থাৎ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটেছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মণিপুরের চান্দেল জেলার নিউ সামতাল গ্রামের কাছে অভিযান চালানো হয়। তারা আরও জানায়, এ সময় বিপুলসংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে সাতটি একে-৪৭ রাইফেল, একটি আরজিপি লঞ্চার, একটি এম৪ রাইফেল এবং চারটি সিঙ্গেল-ব্যারেল ব্রিচ-লোডিং রাইফেল।
তবে তামুর স্থানীয়রা বলছেন, পিডিটির চৌকি ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের বেড়া থেকে দেখা যায় এবং ভারতীয় বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে গুলি চালায়। একজন স্থানীয় ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিহতরা সবাই তামু জেলার পিডিটি সদস্য এবং ঘটনাটি মিয়ানমারের ভূখণ্ডে ঘটেছে।
ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) বলেছে, তারা মাঠপর্যায়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় রয়েছে। তাদের দাবি, নিহতদের মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং তাদের মরদেহগুলো তারপুলিনে মুড়িয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এক যোদ্ধা বলেন, “আমরা দস্যু নই, অপরাধী নই। আমরা সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়ছি। ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের এমন আচরণ করা উচিত হয়নি।”
১৬ মে ভারত মিয়ানমার পক্ষকে মরদেহগুলো হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পর সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা।
এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমন্বয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া নজর কেড়েছে। সীমান্তের ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রম করে গুলি চালানোর অভিযোগ যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।