নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে বলে অভিযোগ এনে কমিশনের ওপর আস্থা প্রত্যাহার করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ কারণে ইসি পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আজ নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে এনসিপির কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তাই তাদের ওপর ভরসা রাখা যাচ্ছে না। দ্রুত ইসি পুনর্গঠন প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর সবকিছুকে পরিকল্পিতভাবে জাতীয় নির্বাচনের দিকে নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে তিনি গণপরিষদ ও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানান।
ঢাকা উত্তরের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এনসিপির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু দল টেন্ডার না পেয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। সরকারের উচিত বিষয়টি তদন্ত করা। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ কোনো দলকে সন্তুষ্ট করা নয়, বরং জনকল্যাণ নিশ্চিত করা।
দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে কমিশন পুনর্গঠন ছাড়া বিকল্প নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন বলেন, “২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ নির্বাচন ঘিরে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা দায়ী। ‘ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপসগং’ মামলায় বিবাদী হয়েও কমিশন আদালতে কার্যকরভাবে অংশ নেয়নি, যার ফলে একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, উচ্চ আদালতে প্রতিকার না চেয়ে ইসি মামলার বাদীকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে, যা পক্ষপাতের ইঙ্গিত দেয়। এমনকি রায় ঘোষণার আগেই ১৯ আগস্ট প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয় এবং পরে রাতারাতি গেজেট প্রকাশ করা হয়, যা ইসির পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানকে স্পষ্ট করে।
এছাড়া ২০২২ সালের ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’কে অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী সরকারের তৈরি আইন হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই আইনের ভিত্তিতে গঠিত কমিশনের ওপর দেশের গণতান্ত্রিক পক্ষগুলোর আস্থা নেই। পলাতক ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের নির্বাচন থেকে বহিষ্কারের প্রস্তাব বাতিল করায় বর্তমান কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিক্ষোভের মাধ্যমে ইসি পুনর্গঠনের দাবিতে আজ মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে এনসিপি।