১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

তজুমদ্দিনে পাউবোর নির্মাণ কাজে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ কালে সাংবাদিকের উপর হামলায় আহত ৬ জন

খন্দকার নিরব, ভোলা প্রতিনিধিঃ

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে মেঘনার তীরের জলকপাট (স্লুইসগেট) নির্মাণকাজে অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় চারজন সাংবাদিক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ সময় গ্রামবাসী ও ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন আহত হন।

তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক বলেন, চাঁদপুর ইউনিয়নে নতুন জলকপাটের নির্মাণকাজের ঢালাই শুরু হয় বৃহস্পতিবার। এলাকাবাসী সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে বলেন, ঢালাই কাজে অনিয়ম হচ্ছে। এই খবর পেয়ে পাঁচ-ছয়জন সাংবাদিক বিকেলে সেখানে যান। তাঁরা দেখেন সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকর্তা নেই। ঠিকাদারের প্রকৌশলীও ছিলেন না। শ্রমিকেরা নিম্নমানের পাথর, বালু, সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই কাজ করছেন।

ইত্তেফাকের উপজেলা প্রতিনিধি রফিক সাদী বলেন, তাঁরা দেখেন বালু, পাথর ও সিমেন্টের অনুপাত ঠিক নেই। শ্রমিকদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁরা সাংবাদিকদের ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে গ্রামবাসী সাংবাদিকদের পক্ষ নিলে শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে মো. শামীম, মো. সেলিম, মো. ফারুক, সালাউদ্দিন, ইয়ামিনসহ ছয়জন গ্রামবাসী আহত হন। তাঁদের মধ্যে চারজনকে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পাউবো সূত্র জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন দুটি জলকপাটসহ ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার মাটির বাঁধ নির্মাণ ও বাঁধের তীরে ব্লক ফেলার কাজ করছে। এ কাজের চুক্তিমূল্য ৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মো. মমিন বলেন, পাথর, বালু, সিমেন্টের অনুপাত ঠিক ছিল। তিনি আরও বলেন, যখন সাংবাদিকেরা সাইটে গেছেন, তখন সেখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা ছিলেন না। তাঁরা অন্য কাজে ছিলেন। এই প্রকৌশলী বলেন, শ্রমিকেরা অশিক্ষিত ও স্থানীয়, তাই তাঁরা কথা-কাটাকাটি করেছেন, যা তাঁদের কাম্য ছিল না।

পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর হাসানও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা একটা পর্যন্ত তিনি সাইটে ছিলেন। পরে তিনি ইউএনওর কার্যালয়ে জরুরি সভায় অংশ নেন। দুইটার পর তিনি সোনাপুরের সাইটে ছিলেন। আবার অন্য একটি সাইটে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এসেছিলেন। সেখানেও তাঁকে সময় দিতে হয়েছে।

তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক এই ঘটনায় তজুমদ্দিন থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোহাব্বত খান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তাঁরা মামলা নেবেন।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top