নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে ভয়াবহভাবে বাড়ছে নকল ও ভেজাল ওষুধের বিস্তার। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের ফার্মেসিতেও এসব বিপজ্জনক ওষুধ ছড়িয়ে পড়েছে, যা রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে।
বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, জীবন রক্ষাকারী ও উচ্চমূল্যের ‘অ্যালবুমিন ইনজেকশন’ এর নকল সংস্করণ বাজারে ছড়িয়ে পড়ায় চিকিৎসকদের অনেকেই এই ইনজেকশন ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। এতে চিকিৎসা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রোগীদের জীবনের ঝুঁকিও বাড়ছে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকায় বিক্রি হওয়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের প্রায় ১০ শতাংশ এবং ঢাকার বাইরের বাজারে প্রায় ২০ শতাংশই নকল বা নিম্নমানের। এসব ওষুধে বিশুদ্ধ উপাদানের পরিবর্তে আটা, ময়দা, এমনকি সুজির মতো অখাদ্য উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০২৪ সালে এমনই এক ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে, যারা নকল ওষুধ তৈরিতে এসব উপাদান ব্যবহার করছিল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নকলকারীরা মূলত দামি ও চাহিদাসম্পন্ন ওষুধকেই টার্গেট করছে। এর ফলে অনেক রোগী কার্যকর চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, বাড়ছে জটিলতা এবং মৃত্যুর আশঙ্কাও।
অন্যদিকে, দেশে বর্তমানে প্রায় আড়াই লাখ ফার্মেসি রয়েছে। কিন্তু এর বড় একটি অংশেরই নেই প্রয়োজনীয় লাইসেন্স বা অনুমোদন। অনুমোদনপ্রাপ্ত ফার্মেসিগুলোর বড় একটি অংশও ওষুধ সংরক্ষণের ন্যূনতম শর্ত মানছে না। ফলে রোগীরা অচল, ক্ষতিকর বা জীবনঘাতী ওষুধ পাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবিলম্বে নকল ওষুধ নির্মূলে কঠোর মনিটরিং, নিয়মিত অভিযান এবং কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন, যেন মানুষের জীবন নিয়ে এ ধরনের খেলা আর না চলতে পারে।