মোঃ নুর আলম পাপ্পু, খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়া খোকসা, ঈদের পরের দিন সন্ধ্যায় খোকসা জানিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো এক স্মরণীয় ও প্রাণবন্ত আয়োজন — “পাইলটিয়ান আন্তঃব্যাচ নৈশ ফুটবল টুর্নামেন্ট ( সিজন-১ ) এর ফাইনাল খেলা।
এই টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন খোকসা উপজেলার নির্বাহী অফিসার জনাব প্রদিপ্ত রায় দীপন, যা আয়োজনে নতুন মাত্রা যোগ করে। তবে ফাইনাল খেলায় ব্যস্ততার কারণে তাঁর অনুপস্থিতি আয়োজকদের মাঝে কিছুটা অভাববোধ তৈরি করে। খেলা শুরু হয় ৯ জুন, সোমবার, সন্ধ্যা ৮ টায় এবং শেষ হয় ১১ জুন বুধবার রাত ১১ টায়।
প্রথম দিন ৮ টি এসএসসি ব্যাচ অংশগ্রহণ করে মোট ৪ টি উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়। দ্বিতীয় দিনেও একইভাবে প্রতিযোগিতা চলে। এরপর ১১ জুন বুধবার, অনুষ্ঠিত হয় বহুল প্রতীক্ষিত ফাইনাল ম্যাচ — সিনিয়র বনাম জুনিয়র, ২০০৮ বনাম ২০১৪ এসএসসি ব্যাচ। দীর্ঘ ৩০ মিনিটের প্রধান খেলা ও অতিরিক্ত ৫ মিনিটের লড়াই শেষে ফলাফল সমতায় গিয়ে পৌঁছায় টাইব্রেকারে। সেখানেই ২০১৪ ব্যাচ দেখায় চূড়ান্ত দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস, জিতে নেয় টুর্নামেন্টের শিরোপা।
পুরো খেলা জুড়ে ফুটবল মাঠ ছিল দর্শকদের উচ্ছ্বাস, চিৎকার ও হাততালিতে মুখর। দর্শকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। জয়ী দলের আনন্দ এবং পরাজিত দলের ব্যথা—এই দুই বিপরীত অনুভূতির সংমিশ্রণে মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় এক অনন্য আবহ।
খেলায় অংশগ্রহণের শর্ত ছিল, খেলোয়াড়দের অবশ্যই জানিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান বা প্রাক্তন শিক্ষার্থী হতে হবে। প্রতিটি দলে মাঠে খেলেছে ৬ জন এবং সর্বোচ্চ স্কোয়াড ছিল ৯ জনের। প্রতিটি ম্যাচে দেখা গেছে অসাধারণ পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও খেলোয়াড়সুলভ আচরণ, যা প্রশংসনীয়।
এই ব্যতিক্রমী আয়োজনটির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখে পাইলটিয়ান্স এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তারা নিজেদের দলবদ্ধতা, দায়িত্বশীলতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে ঈদের দিনে উপহার দিয়েছে এক অনন্য উদাহরণ। খেলার পরিচালনায় ছিলেন অভিজ্ঞ রেফারিরা, যাঁরা ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে ম্যাচগুলো সম্পন্ন করেন।
ফাইনাল খেলা শেষে এক সংক্ষিপ্ত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে অংশ গ্রহন করা এস এস সির প্রতিটি ব্যাচকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। খেলার আয়োজক, রেফারি, স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যান্য সহযোগীদেরও বিশেষভাবে সম্মাননা জানানো হয় তাদের অমূল্য অবদানের জন্য।
এই আয়োজন শুধু খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি হয়ে উঠেছিল এক বন্ধন, এক মিলনমেলা। ঈদের আনন্দকে আরও রঙিন করে তোলে এই আয়োজন। খেলাধুলা যে কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয় বরং এটি নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও ভ্রাতৃত্ববোধ শেখায় — “পাইলটিয়ান আন্তঃব্যাচ ফুটবল টুর্নামেন্ট (সিজন-১)” তারই জীবন্ত প্রমাণ।
আগামীতে এই ধরনের আয়োজনে আরও ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং সাফল্যের প্রত্যাশা রইল