২০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

ভাঙ্গুড়ায় জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক এখন সরকারি প্রভাষক

খালিদ হোসেন হৃদয়, ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি:

ভাঙ্গুড়ায় জাল সনদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক এখন সরকারি প্রভাষক পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে প্রভাষক পদে নিয়োগ পাওয়া সালমা খাতুন বর্তমানে সরকারি নন-ক্যাডার প্রভাষক হিসেবে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটে জালিয়াতির প্রমাণ মিললেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর সালমা খাতুন ভাঙ্গুড়ার হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজে ভূগোল বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তখন নিয়োগ বোর্ডকে ম্যানেজ করে জাল সনদের ভিত্তিতে তিনি নিয়োগ পান।

২০১৪ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অডিটে তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে ধরা পড়ে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত অডিট প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন।

কিন্তু পরে আবারও কলেজ কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে ২০১৬ সালের ৯ জানুয়ারি সালমা খাতুন ভূগোল বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে দ্বিতীয়বার নিয়োগ পান। এবার তিনি ভিন্ন একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দাখিল করেন, যেটির সত্যতা নিয়েও সংশয় রয়েছে। অথচ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে নিয়োগ এনটিআরসিএর মাধ্যমে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়। এ অবস্থায় তার দ্বিতীয়বার নিয়োগও প্রশ্নবিদ্ধ।

২০১৮ সালে কলেজটি জাতীয়করণ হলে সালমা খাতুন সরকারি নন-ক্যাডার প্রভাষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন এবং নিয়মিত বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। এমনকি পূর্বের বকেয়া বেতনও তুলেছেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মাউশি সালমা খাতুনসহ অন্য জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ফের চিঠি দেয়। কিন্তু সেই চিঠির পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক ও স্থানীয় সচেতন মহলে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

অভিযুক্ত প্রভাষক সালমা খাতুন বলেন, “২০১০ সালে আমি প্রথম নিয়োগ পাই। এরপর অডিটে নিবন্ধন সনদ নিয়ে আপত্তি উঠলে আমি চাকরি থেকে পদত্যাগ করি। পরে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুনরায় নিয়োগ পাই। এখন কোনো সমস্যা দেখি না।”

নিয়োগকালীন গভর্নিং বডির সদস্য সচিব ও তৎকালীন অধ্যক্ষ মো. শহিদুজ্জামান এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল লতিফ বলেন, “আমি দুই বছর আগে কলেজে যোগ দিয়েছি। সালমা খাতুনকে সরকারি প্রভাষক হিসেবেই পেয়েছি। মাউশির নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি তাদের এখতিয়ার।”

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top