নিজস্ব প্রতিনিধি:
২০২৪ সালের জুলাই মাস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক রক্তাক্ত অধ্যায় হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু হওয়া গণজাগরণ শেষ পর্যন্ত টানা ৩৬ দিনের সংগ্রামে রূপ নেয়, যা পরিচিতি পেয়েছে “জুলাই ৩৬” নামে।
আন্দোলনের সূচনা হয় ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্টের একটি রায়ের পর। আদালত ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার বাতিল করে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। “কোটা না মেধা? মেধা, মেধা” স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাজপথ।
১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও সরকার সমর্থিত বাহিনীর হামলায় আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। পরদিন রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যু সারাদেশে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে দেয়।
১৮ জুলাই উত্তরা এলাকায় পানি বিতরণ করতে গিয়ে মির মহফুজুর রহমান মুগ্ধের মৃত্যু আন্দোলনকে এক অনন্য মানবিক মাত্রা দেয়। তার “পানি লাগবে, পানি?” প্রশ্নটি পরিণত হয় শান্তির প্রতীকে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ সময়ে ১,৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হন। বিভিন্ন সংগঠনের দাবি, প্রকৃত সংখ্যা ২,০০০ ছাড়িয়েছে। অবশেষে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এই গণঅভ্যুত্থানের।
এ আন্দোলন শুধু সরকার পরিবর্তনই করেনি, রেখে গেছে “জুলাই সনদ” নামে একটি গণতান্ত্রিক রূপরেখা। বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ এই সনদ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে।
জুলাই এখন বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু একটি মাস নয়, এটি পরিণত হয়েছে গণতন্ত্র ও ন্যায়ের চেতনার প্রতীকে।