আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে নতুন একটি আইন অনুমোদন করেছেন। বুধবার ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এ খবর প্রকাশিত হয়। এই সিদ্ধান্ত এসেছে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার পর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের প্রেক্ষাপটে।
ইরানের পার্লামেন্ট কয়েকদিন আগেই আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের একটি প্রস্তাব পাস করে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে আইএইএ পরিদর্শকদের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশের জন্য দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগবে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি স্পষ্ট করে বলেন, আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি, যিনি ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানাননি, তাকে আর ইরানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
এদিকে ইরানি সংবাদপত্র ‘কায়হান’ গ্রোসিকে ‘ইসরাইলি গুপ্তচর’ আখ্যা দিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করলেও ইরান সরকার জানিয়েছে, আইএইএ কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি।
গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইসরাইল ইরানের ফোরদো, ইসফাহান ও নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায়। ইরানি বিচার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ হামলায় ৯৩৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৩২ জন নারী ও ৩৮ শিশু রয়েছে। ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরাইলে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাদের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়েছে। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “গুরুতর ক্ষতি হলেও বোমা মেরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে ধ্বংস করা যায় না।”
উল্লেখ্য, ইসরাইল ও কিছু পশ্চিমা দেশ দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে, যা তেহরান অবিরাম অস্বীকার করে চলেছে। ২৪ জুন দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এটিই ইরানের প্রথম বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া।