নিজস্ব প্রতিনিধি:
টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক মার্কিন রাজনীতিতে নতুন ঝড় তুলেছেন ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে। শনিবার এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক ঘোষণায় বিশ্বের শীর্ষ ধনী বলেন, “এই দল আমেরিকানদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেবে।” তার এই ঘোষণা এসেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চলমান তিক্ত বিরোধের মধ্যেই।
মাস্কের এই সিদ্ধান্তের পটভূমিতে রয়েছে একটি জনমত জরিপ। শুক্রবার তিনি তার অনুসারীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল প্রয়োজন কিনা। পরদিন তিনি জানান, “২:১ ব্যবধানে আপনারা নতুন দল চেয়েছেন, তাই ‘আমেরিকা পার্টি’ তৈরি করা হলো।”
এই ঘোষণার সময়টাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ট্রাম্প ঠিক একদিন আগেই ‘বিগ অ্যান্ড বিউটিফুল’ কর ছাড় বিলে স্বাক্ষর করেছেন, যা মাস্কের তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে। মাস্ক এক্সে সতর্ক করে লিখেছেন, “এই বিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।” তিনি ট্রাম্পের সমর্থক থেকে সমালোচকে পরিণত হওয়ার কারণ হিসেবে এই “বিশাল বাজেট ঘাটতিকেই” দায়ী করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মাস্কের এই পদক্ষেপ মার্কিন রাজনীতির প্রতিষ্ঠিত কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করবে। যদিও ১৬০ বছরের রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাটিক দ্বিদলীয় ব্যবস্থা ভাঙা সহজ হবে না বলে মনে করেন অনেকে। বিশেষ করে যখন ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা এখনও ৪০ শতাংশের ওপরে রয়েছে।
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়েছেন মাস্কের কোম্পানিগুলোর সরকারি ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়ার। জবাবে মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের বিল সমর্থনকারী কংগ্রেস সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় অর্থ ব্যয় করবেন। এই সংঘাত রিপাবলিকান দলকেও চিন্তিত করে তুলেছে, বিশেষ করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে।
এদিকে, এই রাজনৈতিক অস্থিরতা টেসলার শেয়ার মূল্যকেও প্রভাবিত করেছে। গত নভেম্বরে ৪৮৮ ডলারে পৌঁছানো শেয়ারটি এপ্রিলে অর্ধেকে নেমে এসেছিল এবং গত সপ্তাহে ৩১৫.৩৫ ডলারে স্থিতিশীল হয়েছে।
মাস্কের এই নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ মার্কিন রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে, তা এখনই বলা কঠিন। তবে এটি যে আগামী নির্বাচনগুলোকে নাটকীয়ভাবে প্রভাবিত করতে পারে, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা একমত। ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউস এখনও মাস্কের এই ঘোষণার বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।