মিজান, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের শিংরাউলী গ্রামের সহজ-সরল, সদাচারী এবং শিক্ষিত তরুণ সৈয়দ শিহাব উদ্দিন মিজান এক নির্মম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও রাজনৈতিক শত্রুতার জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সম্পূর্ণ নির্দোষ থাকা সত্ত্বেও তাকে জেল খাটতে হয়েছে প্রায় ১ মাস ১০ দিন, যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে রাজনৈতিক মতভেদ ও পারিবারিক মনোমালিন্যের কারণে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার সেই বিরোধ মীমাংসা করলেও চাচাতো ভাই তা মেনে না নিয়ে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠেন এবং রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে উঠে পড়ে লাগে। কয়েকবার ষড়যন্ত্র চালিয়েও ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচারের আশ্রয় নেয়।
২০২৫ সালের ১৬ মে, শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে, স্থানীয় পুলিশ শিহাব উদ্দিন মিজানের বাড়িতে হঠাৎ অভিযান চালায় এবং কোনো সুস্পষ্ট কারণ না দেখিয়েই তাকে গ্রেপ্তার করে। পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার প্রশ্ন করা হলেও পুলিশ কোনো সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
পরবর্তীতে জানা যায়, শিহাবের বিরুদ্ধে একের পর এক মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। তাকে কখনো “কিশোর গ্যাংয়ের লিডার”, কখনো “মাফিয়া গ্যাং প্রধান”, আবার কখনো “ সন্ত্রাসী” হিসেবে উপস্থাপন করে মামলা দায়ের করা হয়। এমনকি প্রচার চালানো হয় যে, “তার ভয়ে কেউ নাকি বাজারে উঠতেও সাহস করে না”।
অথচ এলাকাবাসী, পরিবার ও প্রতিবেশীরা একবাক্যে জানিয়েছেন—এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শিহাব একজন নিরীহ, ভদ্র ও সামাজিকভাবে সুপরিচিত যুবক। তার পিতা, মরহুম সৈয়দ বশির উদ্দিন, ছিলেন একজন সৎ ইউপি সদস্য ও এলাকার শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।
বিশ্বস্ত রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, শিহাব উদ্দিন মিজান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সক্রিয় কর্মী। তাকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করে ভবিষ্যতের নেতৃত্বে উঠে আসার পথ রুদ্ধ করতেই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।
জেল হেফাজতের সময়েও থেমে থাকেনি ষড়যন্ত্র। ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে তার রাজনৈতিক নেতা আলহাজ্ব হাজী মুজিব সাহেবের সঙ্গে তোলা ছবি বিকৃত করে ছড়ানো হয়, এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও পোস্টের মাধ্যমে তার সামাজিক ও রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়।
অবশেষে দীর্ঘ ১ মাস ১০ দিন জেল হেফাজতের পর আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেন। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও, ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীও তার পাশে দাঁড়িয়ে এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দাবি করেছেন।