নিজস্ব প্রতিনিধি:
সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দ্রুত চূড়ান্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে, যার অংশ হিসেবে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে খসড়া পাঠিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই খসড়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা হয়। দলটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকে ঘোষণাপত্রে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে সংবিধান পুনর্লিখনের বিপক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘোষণাপত্রে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভূমিকাও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। দলটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত মতামত সরকারে জমা দেবে। গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, শেখ হাসিনা সরকারের আমলের গণতন্ত্র হরণ, গুম-খুন, অর্থনৈতিক লুটপাট এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুটের বিচার করা হবে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশি পণ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া সংসদে নারী আসন ৫০ থেকে ১০০তে উন্নীত করা এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিরোধিতা করা হয়। বিএনপি নেতারা সরকারকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নেরও তাগিদ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর জুলাই ঘোষণাপত্র জারির দাবি তোলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরবর্তীতে সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা ও মতবিনিময়ের পর এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এই প্রক্রিয়া।