নিজস্ব প্রতিনিধি:
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের রক্তাক্ত দিনগুলোর মর্মান্তিক চিত্র ফুটে উঠেছে চানখাঁরপুল মামলার অভিযোগপত্রে। ২০২৪ সালের ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন নারায়ণগঞ্জ আদমজী নগর কলেজের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তায়িম ভূঁইয়া (১৯), যিনি নিজেই একজন পুলিশ কর্মকর্তার সন্তান ছিলেন। অভিযোগপত্রে উঠে এসেছে, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন খুব কাছ থেকে তায়িমকে লক্ষ্য করে গুলি চালান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ দাখিলকৃত ৫৭৬ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে, কীভাবে ২০২৪ সালের ১৬ থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সমন্বিত হামলায় শতাধিক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান। বিশেষ করে ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা ও শনির আখড়ায় পুলিশের বেপরোয়া গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণের ভয়াবহ বিবরণ রয়েছে দলিলটিতে।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯ জুলাই রাতে আওয়ামী লীগের বৈঠক থেকে “দেখামাত্র গুলি” করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তদন্তে প্রমাণ মিলেছে যে, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই গণহত্যা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়। ৪ আগস্ট ফার্মগেটে গোলাম নাফিস নামে আরেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে গুলি করে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে রাখা হয় এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বাধা দেয়ায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইকবাল হোসেন ও ওসি জাকির হোসেনসহ চারজন আসামি এখনো পলাতক। মামলাটি বর্তমানে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে এবং ১০ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের জন্য দিন ধার্য হয়েছে। নিহত তায়িমের পরিবারসহ শতাধিক শোকসন্তপ্ত পরিবার ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় রয়েছেন।