নিজস্ব প্রতিনিধি:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে গোপালগঞ্জে সংঘটিত হামলার পেছনে ভারত থেকে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে। একাধিক অডিও বার্তায় হাসিনাকে এনসিপি নেতাদের “অক্ষত অবস্থায় ফিরতে না দেওয়ার” সরাসরি নির্দেশনা দিতে শোনা যায়।
অডিও প্রমাণ অনুযায়ী, হাসিনা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আতাউর রহমান পিয়াল ও নিউটন মোল্লাকে বলেন: “টুঙ্গিপাড়ায় আমার বাবার কবর ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে এনসিপি… গোপালগঞ্জের মাটি থেকে যেন কেউ অক্ষত ফিরে না যায়।” এই নির্দেশনার পরদিন বুধবার (১৬ জুলাই) পুলিশ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা এবং এনসিপি নেতাদের গাড়িবহরে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
খবর অনুসন্ধানে জানা গেছে, হামলা সমন্বয়ের জন্য হাসিনা কলকাতায় অবস্থিত তার ফুপাতভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লন্ডনপ্রবাসী আব্দুর রহমান এবং শরীয়তপুরের সাবেক এমপি ইকবাল হোসেন অপুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ফেসবুক লাইভ থেকে হামলার নির্দেশনা দেন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ইয়াসমিন আলম নারীদের সংগঠিত করেন, যাকে পরবর্তীতে পুলিশ গ্রেফতার করে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুব আলী খান ও সম্পাদক শফিকুল আলম কাজল স্থানীয়ভাবে হামলা পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন। তাদের লক্ষ্য ছিল এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহসহ শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে হত্যাযজ্ঞ চালানো।
উল্লেখ্য, ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এনসিপির মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে সমাবেশের আগেই “টুঙ্গিপাড়ায় কবর ভাঙচুর” এর মিথ্যা গুজব ছড়ানো হয়। হামলায় কমপক্ষে ৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ায় গোপালগঞ্জে ৭২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কারফিউ জারি করা হয়। পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৬৪ জনকে গ্রেফতার করেছে, যাদের মধ্যে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৭৫ জন নেতাকর্মীর নাম রয়েছে।
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে, যেখানে জাতিসংঘ বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানাচ্ছে।