আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। শুক্রবার হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা এক ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ইসরাইল যদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হয়, তাহলে হামাস দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।
২০ মিনিটের ওই ভিডিও বার্তায় আবু ওবাইদা দাবি করেন, সম্প্রতি হামাস ইসরাইলকে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছিল, যেখানে সব বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার শর্ত রাখা হয়েছিল। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে। আবু ওবাইদা বলেন, “এটা স্পষ্ট যে বন্দি মুক্তির বিষয়ে নেতানিয়াহু সরকারের কোনো আগ্রহ নেই। তারা শুধু যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়।”
তিনি জানান, হামাস এমন একটি শান্তিচুক্তি চায়, যেখানে পূর্ণ যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলে মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা থাকবে। আবু ওবাইদা স্পষ্ট করে বলেন, “কাতারে চলমান আলোচনা থেকে ইসরাইল যদি সরে আসে, তাহলে হামাসও কোনো আংশিক চুক্তিতে ফিরে যাবে না।”
হামাসের মুখপাত্র ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আমাদের যোদ্ধারা গাজায় ইসরাইলি সেনাদের মোকাবিলায় প্রস্তুত।” এছাড়া তিনি ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আক্রমণে আরব ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেন। আবু ওবাইদা বলেন, “তোমাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে হাজার হাজার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের রক্তের দায় তোমাদের কাঁধে বর্তাবে।”
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে আলোচনাকালে জানান, গাজা থেকে শিগগিরই আরও ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্ত করেছি। খুব দ্রুত আরও ১০ জন মুক্তি পাবেন। আমরা আশা করি, এই প্রক্রিয়া শীঘ্রই শেষ হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলা চলছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৫৮ হাজার মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।