নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অপরাধ প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকাশ্যে সশস্ত্র ছিনতাই, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে খুনের মতো ঘটনাগুলো নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। গত ১৭ জুলাই ধানমন্ডির রাসেল স্কয়ারে এক ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের সামনেই এক যুবক চাপাতি হাতে নিয়ে পথচারীর ব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে। এমন ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক দৃশ্যে পরিণত হয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে খুনের মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। জানুয়ারিতে ২৯৪টি থেকে জুনে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪৪টিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত অপরাধের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে, কারণ অনেক ভুক্তভোগীই থানায় মামলা করতে অনীহা প্রকাশ করেন।
অপরাধ দমনে সরকার ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ও ‘চিরুনি অভিযান’ চালালেও এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ খন্দকার ফারজানা রহমান বলেন, “পুলিশের মনোবল ভেঙে যাওয়ায় অপরাধীরা সুযোগ পাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে গোপালগঞ্জ সহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতা স্বীকার করেছেন তিনি।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, অপরাধ প্রবণতা রোধে সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রয়োজন। সমাজ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হকের মতে, “শুধু অভিযান নয়, অপরাধের মূল কারণ চিহ্নিত করে তা দূর করতে হবে। নইলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।”
বর্তমান পরিস্থিতিতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে না এলে সামাজিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে।