মোঃ নুর আলম পাপ্পু, খোকসা কুষ্টিয়াঃ
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন সময় হঠাৎ রূপ নেয় আতঙ্ক আর কান্নায়। কৃষক বিধান কুমার রায়ের কন্যা সাথী রায়ের (১৯) বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে তখন চলছিল সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, আর উৎসবের প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। আনন্দ, হাসি আর নতুন জীবনের স্বপ্নে মুখর ছিল গোটা পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
কিন্তু সেই খুশির মুহূর্তকে ছিন্নভিন্ন করে দেয় এক ভয়াবহ ডাকাতি।
গত ২০ জুলাই রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে মুখোশধারী ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে তারা লুট করে নেয় কনের পরিবারের সম্পদ নগদ টাকা ও সোনা লঙ্কার।
এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর জানতে পেরে, আর এক মুহূর্তও দেরি করেননি সমাজসেবক ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কুমারখালি-খোকসা আসনের হাতপাখা মার্কার মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার খান। তিনি রাতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান বিধান রায়ের বাড়িতে।
তিনি শুধু সমবেদনা জানিয়ে ফিরে আসেননি। বরং রাতভর তিনি ছিলেন সেই বিয়ের প্রস্তুতির ঘরে, মানুষের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনার জন্য। উপস্থিত থেকে তিনি নিজ হাতে সহযোগিতা করেন, সাহস দেন, আশ্বাস দেন, যেন এই কন্যার বিয়ে থেমে না যায়।
তিনি বলেন, এটি কেবল একটি পরিবার নয়, আমাদের সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। একটি মেয়ের বিয়েতে এমন নৃশংসতা যে করেছে, তারা মানুষ হতে পারে না। ইসলাম এমন অন্যায় কখনো সমর্থন করে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম, যেখানে প্রতিবেশীর নিরাপত্তা রক্ষাই বড় ইবাদত।
তিনি আরও বলেন, মানুষ মানুষের জন্য — এই বিশ্বাসই আমাদের চালিত করে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, বিপদে-আপদে এই পরিবারের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব ইনশাআল্লাহ।
তার উপস্থিতি শুধু সাহস নয়, ছিল এক অনন্য উদাহরণ। তিনি বিয়ের শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থেকে নবদম্পতির জন্য দোয়া করেন, এবং এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন —
“সকল ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষকে ভালোবাসা ও সহানুভূতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। সমাজের কুলষ দূর করতে হলে, আমাদেরকে ইসলামের ন্যায়নীতির পথে হাঁটতে হবে।
এমন মানবিক দৃশ্য দেখে ইসলামপুর গ্রামবাসী আবেগে বলেন এই রকম মানুষই নেতা হওয়ার যোগ্য। যে সুখে-দুঃখে পাশে থাকে, সেও তো পরিবারেরই অংশ।