নিজস্ব প্রতিনিধি:
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মর্মস্পর্শী দৃশ্য চোখে পড়েছে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। সোমবার দুপুরের ভয়াবহ এ ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী দগ্ধ হওয়ার পর হাসপাতাল করিডরে অভিভাবকদের করুণ আর্তনাদে প্রকম্পিত হচ্ছিল পুরো এলাকা।
ইয়াসমিন আক্তার নামে এক মা তার পঞ্চম শ্রেণির মেয়ে নুরে জান্নাত উষার জন্য কাতরাচ্ছিলেন, “আমার মেয়ের সব পুড়ে গেছে, কেউ তার জ্বালা থামাও।” তার ছেলে তাহমিন ইসলাম রোহান জানায়, স্কুল থেকে তার বোনকে উদ্ধার করার সময় তার পুরো শরীর পুড়ে গেছে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সাদীর মা বারবার একই প্রশ্ন করছিলেন, “মিস, আমার বাচ্চা কোথায়?” পারুল নামের আরেক অভিভাবক তার তৃতীয় শ্রেণির মেয়ে নুসরাত আক্তারকে খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন স্কুল প্রাঙ্গণে।
এগারো বছর বয়সী আরিয়ানের মা মনিকা আক্তার আঁখি কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “আল্লাহ আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দাও।” তার ছেলে সকালে সুস্থ অবস্থায় স্কুলে গেলেও এখন বার্ন ইউনিটে জীবন-মরণ যুদ্ধে লড়ছে।
সপ্তম শ্রেণির শায়ানের ফুপু রুবিনা আক্তার এবং তৃতীয় শ্রেণির জুনায়েদ হাসানের মা ঝর্না আক্তারের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল হাসপাতালের করিডর। জুনায়েদের মা বলছিলেন, “আর একটু পরেই ছুটি হলে ছেলে বাড়ি ফিরত, এখন সে আইসিইউতে।”
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল নিহতের সংখ্যা ১৯ নিশ্চিত করেছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ আহত শিক্ষার্থীর অবস্থাই আশঙ্কাজনক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা জাতি শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছে।