নিজস্ব প্রতিনিধি:
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার সময় শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী তার দগ্ধ শরীর নিয়েই অন্তত ২০ শিক্ষার্থীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সোমবার দুপুরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান স্কুলের প্রাইমারি সেকশনের ভবনে বিধ্বস্ত হলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। ওই সময় ক্লাসরুমে থাকা অসহায় শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসেন সমন্বয়ক মাহেরীন চৌধুরী। প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীদের বর্ণনা অনুযায়ী, আগুন ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ভবন থেকে তিনি দ্রুততম সময়ে শিশুদের বের করে আনার চেষ্টা করেন। তার অসীম সাহসিকতা ও দ্রুত সিদ্ধান্তের ফলে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
মাহেরীনের স্বামী মনসুর হেলাল জানান, তার সমগ্র শরীরই মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছিল। চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ার কথা বললেও তার ধারণা, এটি প্রায় শতভাগই ছিল। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার আগে স্বামীর সঙ্গে শেষ কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন মাহেরীন।
এক অভিভাবক বলেন, “ম্যাডাম ছিলেন অসাধারণ। সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা আমাদের জানিয়েছেন, তার প্রচেষ্টায় অন্তত ২০ শিশুর জীবন বেঁচেছে।” স্কুল ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এলেও মাহেরীনের এই আত্মত্যাগের গল্প সবাইকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। তার এই বীরত্বপূর্ণ কাজ তাকে এক অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে, যা শিক্ষকতা পেশার মাহাত্ম্যকে আরও উজ্জ্বল করেছে।