আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মার্কিন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ভারত, চীন ও ব্রাজিলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন রুশ তেল আমদানিকারক দেশগুলোর ওপর শতভাগ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে।
গ্রাহাম তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, “রাশিয়ার তেলের ৮০ শতাংশ রপ্তানি হয় এই তিন দেশে। তোমরা যদি সস্তা রুশ তেল কিনে পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করো, আমরা তোমাদের অর্থনীতিকে গুঁড়িয়ে দেব।” তিনি এটিকে “রক্তমাখা অর্থনৈতিক লেনদেন” বলে আখ্যায়িত করেন। তার মতে, এই দেশগুলোর সমর্থনেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছেন।
সিনেটর গ্রাহাম পুতিনের উদ্দেশ্যে বলেন, “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন তিনি। ইউক্রেন ১৯৯০-এর দশকে রাশিয়ার প্রতিশ্রুতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করেছিল, কিন্তু পুতিন সেই প্রতিশ্রুতি ভেঙেছেন।” এর আগেও গ্রাহাম একটি বিল প্রস্তাব করেছিলেন যেখানে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা ছিল।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে, ৫০ দিনের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি না হলে রুশ তেল আমদানিকারকদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটেও ব্রাজিল, ভারত ও চীনকে পুতিনকে শান্তি আলোচনায় বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হুমকির কড়া জবাব দিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের জনগণের জ্বালানি চাহিদা পূরণই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা বাজারের প্রাপ্যতা ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এ বিষয়ে কোনো দ্বিমুখী মানদণ্ড আমরা মেনে নেব না।”
এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মার্কিন এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর জন্য যা রুশ তেলের ওপর নির্ভরশীল।