২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

রাষ্ট্রযন্ত্রের মুখোশে দলীয় দুর্বৃত্তায়ন

কতকাল ধরে দমন-পীড়নের ভারে নিঃশেষিত ছাত্রসমাজ আজ রাস্তায়; কিন্তু আশ্চর্য এই যে—স্বৈরশক্তির লেজুড়বৃত্তির নামধারী ছাত্রসংগঠন পর্যন্ত সচিবালয়ের বুকে দুঃসাহসিক হামলা চালায়! কাহার প্ররোচনায়? কোন আদেশে? আর কার স্লোগানে?

ছাত্রলীগ—যারা কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ, অথচ বাস্তবে সর্বত্র দৃশ্যমান—তাদের পদচারণায় যেন রাষ্ট্রযন্ত্রও দ্বিধাগ্রস্ত। শুধু নিষিদ্ধ বলেই কি তারা থেমে গেছে?
নাকি রাজপথে, পুলিশে, প্রশাসনে, এমনকি মন্ত্রিপরিষদের অলিন্দে এখনো গোপনে-প্রকাশ্যে শাসকের বাহন হয়েই বিরাজমান?

সাদ্দামেরা আজ ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক—তাদের কণ্ঠে উঠছে ‘আবার হাসিনা’, আবার অন্যপ্রান্তে ছাত্রদের দাবিতে ‘গণতন্ত্র চাই’। এই দ্বৈত সুর, এই ধোঁয়াশা—এ যেন এক নাট্যাভিনয়ের কুয়াশাঘেরা দৃশ্য, যেখানে অভিনেতা ও শাসক উভয়েই একে অপরের মুখোশ পরে।

রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ বিভাগ, বিচারিক কাঠামো—সবকিছুতেই যেন নির্লিপ্ততা ও অপারগতার ছায়া।
কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই, নেই কোনো কাঙ্ক্ষিত শাস্তির দৃশ্যপট। চিহ্নিত অপরাধী, দলীয় ছত্রচ্ছায়ায় লালিত—তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর সাধারণ নাগরিক, প্রতিবাদী ছাত্র, যাদের হাতে শুধুই কলম ও কণ্ঠস্বর—তাদের ঠাঁই হয় হাজত কিংবা হাসপাতালের বিছানায়।

এই যে রাষ্ট্রযন্ত্রের এমন বেপরোয়া দলীয় অধঃপতন, এ কি কেবল কাকতালীয়? না, এটি দীর্ঘদিনের দলানুগত্যে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া এক চক্রবৎ দুর্বৃত্তায়নের ফল।
এই দেশ, এই জনপদ—যেখানে ন্যায়বিচার গুম হয়ে যায় চাটুকারিতার করতালিতে—সেখানে রাষ্ট্র মানে আর কিছুই নয়, কেবলমাত্র একটি দলে পরিণত হওয়া একচ্ছত্র বলয়ের নাম।

আম্মার হোসাইন
শিক্ষার্থী, ইসলামি আইন বিভাগ, আজহার বিশ্ববিদ্যালয়

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top