তনিয়া আক্তার, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
ফিটনেসবিহীন বাস অপসারণ ও ক্যাম্পাস টু ঢাকা অভিমুখী রুটে বাস সার্ভিস বৃদ্ধিকরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ত্রিশাল, ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক পরিবহনের নির্ধারিত বাস আটকে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
শিক্ষার্থীদের পাঁচটি দাবি হলো: দ্রুত ফিটনেসবিহীন বাস অপসারণ করে নতুন বাস চালু করা; দাবি বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ; পরিবহন মালিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন রুটের ভাড়া ঠিক করা; রাজধানীমুখী বাসের ব্যবস্থা রাখা; এবং সব ড্রাইভার ও হেলপারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিআরটিসির বাসগুলোর ইঞ্জিন মাঝপথে বারবার বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বাস ঠেলে স্টার্ট দিতে হয়। এ ছাড়া ঢাকামুখী চাকরির পরীক্ষার জন্য যদি অন্তত সপ্তাহে এক দিন বাস দেওয়া হয়, তাহলে তা সবার জন্যই উপকার হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইলিয়াস বলেন, ‘বিআরটিসির চলাচলরত ফিটনেসবিহীন বাসগুলো ইঞ্জিন প্রায়ই বন্ধ হয়ে মাঝরাস্তায় বিকল হয়ে যায়, তখন শিক্ষার্থীদের বাস ঠেলে স্টার্ট দিতে হয়। তা ছাড়া অনার্সের পর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিতে ঢাকা যেতে হয়, এখন যদি সপ্তাহে এক দিন ঢাকা পর্যন্ত বাস দেওয়া হয়, তাহলে তা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক হেল্প হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন রুটে চলাচলরত বাসগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, মালিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।’
বিক্ষোভের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. আশরাফুল আলম এবং প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে ১৫টি বাস রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি বিআরটিসির ভাড়ায় চালিত বাস। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এই বাসগুলোর ইঞ্জিন বিকল হওয়া, চাকা ফেটে যাওয়া এবং কাচ ভেঙে পড়ার মতো নানা দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. আহমেদ শাকিল হাসমী বলেন, এখন থেকে বিআরটিসি নষ্ট বাসগুলো আর চলবে না। নিজস্ব বাস দিয়ে শিডিউল পূর্ণ করা হবে। প্রাইভেট কোম্পানির বাসের জন্য টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কোম্পানির বাস না আসা পর্যন্ত নিজস্ব বাস দিয়েই শিডিউল চলবে।
তিনি আরও বলেন, বিআরটিসির সব বাস একসাথে বন্ধ করলে ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তি হবে। আমাদের নিজস্ব বাস দিয়ে মেকআপ করা সম্ভব নয়। সেই কারণে ৩টি বিআরটিসি বাদ দিয়ে বাকি ৬টি বিআরটিসি চলবে আপাতত। টেন্ডার হলে আরো ২টি বিআরটিসি ফেরত পাঠাবো।
এছাড়াও ক্যাম্পাস টু ঢাকামুখী বাস সার্ভিস চালুর লক্ষ্যে রোববার (২৭ জুলাই) বিকেল ৩টায় পরিবহন প্রশাসকের কক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।