নিজস্ব প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে আগস্ট মাসে। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৫৭ জন আসামি রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযোগ আনা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের তথ্যমতে, শেখ হাসিনা ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে করা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে। এছাড়া রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয় আন্দোলনকারীকে পোড়ানোর মামলার বিচার কার্যক্রমও একই সময়ে শুরু হতে পারে। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার মামলার শুনানিও চলমান রয়েছে।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন। ট্রাইব্যুনাল ৩ আগস্ট প্রসিকিউশনের প্রারম্ভিক বিবৃতি এবং ৪ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করার তারিখ নির্ধারণ করেছে।
এদিকে, চানখাঁরপুলে ছয়জন হত্যার মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে ১০ আগস্ট প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও ১১ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। আশুলিয়ার মামলায় সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ ১৬ জন আসামির মধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত অপরাধের ৪৩০টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত ২৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৩টি বিবিধ মামলা এবং ৪টি নিয়মিত মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। এসব মামলায় মোট ২০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেফতার হয়েছেন এবং ১৩২ জন এখনো পলাতক রয়েছেন।
বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। মানবতাবিরোধী এই অপরাধগুলোর বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে বলে জানা গেছে।