নিজস্ব প্রতিনিধি:
গত বছরের ২৪ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে ৩৭ জন সাংবাদিকের সাথে এক গোপন মতবিনিময়ে মিডিয়া কৌশল নির্ধারণ করেছিলেন। ফাঁস হওয়া আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা, ইন্টারনেট বন্ধ রাখা, আলজাজিরা নিষিদ্ধকরণ এবং বিরোধী মিডিয়াকে দমন করার সুপারিশ করেছিলেন।
মোজাম্মেল বাবুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় সাংবাদিকরা আন্দোলনকারী ছাত্রনেতাদের “সন্ত্রাসী” আখ্যা দিয়ে তাদের গ্রেফতারের পরামর্শ দেন। তারা অভিযোগ করেন, “বিএনপি-জামায়াতের জঙ্গিরা” আন্দোলনে ধ্বংসাত্মক তাণ্ডব চালাচ্ছে। শেখ হাসিনা উত্তরে বলেন, “এখানে আপনারা ভালো তথ্য দিয়েছেন, এগুলো কনটেন্ট আকারে তৈরি করে ছড়িয়ে দিন।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা শেখ হাসিনার সরকারের সমালোচনামূলক সংবাদ “চেপে যাওয়া” এবং সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়নের ঘটনা উপেক্ষা করার অঙ্গীকার করেন। ফরিদা ইয়াসমিন, নঈম নিজামসহ বেশ কয়েকজন ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার সুপারিশ করেন।
বর্তমানে এই সভায় অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই বিভিন্নভাবে বিচারের মুখোমুখি। মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত ভারতে পালানোর সময় আটক হয়েছেন, নঈম নিজাম ও ফরিদা ইয়াসমিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন। এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ নামে গঠিত এই সংগঠনটি পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের প্রচারণা যন্ত্রে পরিণত হয়।
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যেখানে ক্ষমতাসীনদের তোষণকারী একটি গোষ্ঠী পেশাদার সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালাকে পদদলিত করেছে।