২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডিতে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে এক ঘণ্টাব্যাপী এই পরিদর্শনকালে তিনি আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. ইউনূস দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাউন্সেলিং সেবা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ারও তাগিদ দেন তিনি।

বার্ন ইনস্টিটিউট পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত এবং আহতদের বর্তমান অবস্থা জানতে চান। ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীদের আন্তর্জাতিক প্রটোকল অনুসরণ করে মাল্টিডিসিপ্লিনারি কনসালটেশন বোর্ডের পরামর্শে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে ৪ জন ক্রিটিক্যাল, ৯ জন সিভিয়ার এবং ২৩ জন ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরির রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোগীদের অবস্থা বিবেচনায় এই শ্রেণিবিন্যাস সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হচ্ছে।

চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রাপ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সরঞ্জাম ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছু বিশেষ যন্ত্রপাতি সিঙ্গাপুরের চিকিৎসক দল নিজেদের সঙ্গে করে এনেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ঘটনার প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী হাসপাতালগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত রোগীদের বার্ন ইনস্টিটিউট ও সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সরা একসঙ্গে ৩০ জন দগ্ধ রোগীকে তাৎক্ষণিক সেবা প্রদান করতে সক্ষম হন।

তবে এ প্রক্রিয়ায় কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও স্বীকার করা হয়। সায়েদুর রহমান বলেন, প্রায় ১০টি হাসপাতালে রোগীদের প্রাথমিকভাবে ভর্তি করানোর ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। কিছু দেহাবশেষ শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রয়োজন হওয়ায় সময় লাগছে। এছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের স্বল্পতাও প্রকটভাবে অনুভূত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি আহতদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হওয়ারও তাগিদ দেন। ড. ইউনূস দেশি-বিদেশি সকল চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে বিপদের সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানো বিদেশি বিশেষজ্ঞদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

পরিদর্শনকালে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top