নিজস্ব প্রতিনিধি:
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সম্প্রতি ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন: উন্মোচিত হচ্ছে শেখ হাসিনার গোপন আদেশনামা’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে, যা নিয়ে বাংলাদেশে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি প্রাণঘাতী হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তথ্যচিত্রটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েমের সাক্ষাতকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার সাক্ষাতকার না নেওয়ায় সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
এএইচএম শাহীন নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে পোস্ট করে আল-জাজিরার এই পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করেন। তার মতে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নাহিদ ইসলাম ছিলেন আপসহীন চরিত্র এবং আন্দোলনের আইকনিক ব্যক্তিত্ব। শাহীন প্রশ্ন তোলেন, কেন আল-জাজিরা আন্দোলনের মূল নেতৃত্বের সাক্ষাতকার নেয়নি, বরং তুলনামূলক কম পরিচিত সাদিক কায়েমকে প্রধান চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছে।
এই বিতর্কে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নাজিফা জান্নাত আরও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে আল-জাজিরার সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের ‘কষায়ে থাপড়ানো’ এবং জবাবদিহির মুখোমুখি করার হুমকি দেন। নাজিফা সাদিক কায়েমকে ‘ছাত্রলীগের আমব্রেলার নিচে ঘাপটি মেরে থাকা ব্যক্তি’ বলে আখ্যায়িত করে তার ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন।
তথ্যচিত্রটি নিয়ে চলমান বিতর্কে দুটি প্রধান বক্তব্য উঠে এসেছে: একপক্ষ মনে করছে, আল-জাজিরা ইচ্ছাকৃতভাবে আন্দোলনের মূলধারার নেতৃত্বকে উপেক্ষা করেছে, অন্যপক্ষ则认为 সাদিক কায়েমের মত কম পরিচিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের কণ্ঠস্বরও শোনার দাবি রাখে।
এই প্রতিবেদন প্রসঙ্গে নাজিফা জান্নাতের সাথে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সামাজিক মাধ্যমের এই আলোচনা প্রমাণ করে যে জুলাই আন্দোলনের ইতিহাস রচনা ও উপস্থাপন নিয়ে বাংলাদেশে গভীর মতপার্থক্য বিদ্যমান।