নিজস্ব প্রতিনিধি:
গুলশানে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদের পেছনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই তরুণ নেতা এক সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জার অস্ত্রধারী ক্যাডার ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের পদ লাভ করেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্রপ্রতিনিধির দায়িত্বেও ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নোয়াখালীর সেনবাগের আবদুল রাজ্জাক সোলায়মান রিয়াদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার পলাতক মেয়র কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত তার মির্জার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। দিনমজুর ও রিকশাচালক পিতার সন্তান রিয়াদের জীবনে আমূল পরিবর্তন আসে গত বছরের আগস্টের পর। সাধারণ পোশাকের বদলে তিনি দামি ব্র্যান্ডের পোশাক পরিধান শুরু করেন, গ্রামের বাড়িতে নির্মাণ করেন দৃষ্টিনন্দন ডুপ্লেক্স বাড়ি। গত কুরবানির ঈদে তিনি লাখ টাকা মূল্যের গরু কুরবানি দেন যা তার পরিবারের ইতিহাসে প্রথম।
এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রিয়াদের এই আকস্মিক বিত্তবৈভব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিলেন। তাদের মতে, রিয়াদের আয়ের কোনো বৈধ উৎস ছিল না। অথচ অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হন এবং নিজেকে ছাত্রপ্রতিনিধি ও সমন্বয়ক হিসেবে উপস্থাপন করতে শুরু করেন।
গত রোববার সমন্বয়ক পরিচয়ে রিয়াদ ও তার সহযোগী কাজী গৌরব অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মি আহমেদের বাসায় গিয়ে ৪০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হলে গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রিয়াদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে, যদিও অপু পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় রিয়াদের রাজনৈতিক উত্থান ও বর্তমান পতন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার এই রূপান্তর ও কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির একটি অন্ধকার দিককে উন্মোচিত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।