নিজস্ব প্রতিনিধি:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ সফরকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা তীব্র হয়েছে। গত ২৪ ও ২৫ জুলাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম মালয়েশিয়া সফর করেছেন, যেখানে তিনি মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব জেনারেল আমরান মোহাম্মদ জিনের সাথে বৈঠক করেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ড. ইউনূসের এই সফরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিসহ চারটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর, ফরেন সার্ভিস একাডেমি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সাথে সহযোগিতা। যদিও জ্বালানি খাতে সমঝোতা স্মারক নিয়ে আলোচনা চললেও এটি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানা গেছে।
ড. ইউনূসের এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় সফর। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে এই সফর হচ্ছে, যা দুই নেতার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেরই ইঙ্গিতবাহী। ২০২৪ সালের অক্টোবরে আনোয়ার ইব্রাহিম ঢাকা সফর করেছিলেন, যা ছিল অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশে কোনো বিদেশি সরকার প্রধানের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।
সফরে আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শ্রমবাজার, রোহিঙ্গা সংকট ও মিয়ানমার ইস্যু, কৃষি, জ্বালানি, শিক্ষা, হালাল অর্থনীতি এবং সুনীল অর্থনীতি। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে আগ্রহী, যা দুই দেশের মধ্যে বর্তমান ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্যকে আরও বাড়াতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে ঘিরে কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সফর শেষে ড. ইউনূসের ইন্দোনেশিয়া সফরের পরিকল্পনা থাকলেও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।