নিজস্ব প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা জুলাই আন্দোলনের বর্তমান অবস্থান নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। রোববার রাতে প্রায় ২৪ মিনিটের একটি ফেসবুক লাইভে তিনি আন্দোলনের নামে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগ তুলে ধরেন।
গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ নেতার গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে উমামা বলেন, “জুলাই আন্দোলনকে কেন ‘মানি মেকিং মেশিন’ বানাতে হবে? আমরা কি এর জন্য লড়াই করেছিলাম?” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এখন কি সমন্বয়ক বাহিনী তৈরি হচ্ছে, যারা আওয়ামী লীগের রক্ষী বাহিনীর মতোই দখলদারিতে মেতে উঠেছে?”
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে উমামা বলেন, “আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি নতুন বাংলাদেশের। সাধারণ মানুষকে নিয়ে লড়াই করেছি বলেই এক বছর টিকে ছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আর পারিনি।” তিনি স্বীকার করেন যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে সরে আসার পর তাকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
উমামা তার লাইভে আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আমি দেখেছি সমন্বয়ক পরিচয়ে অনেকে টেন্ডার-তদবির বাণিজ্য করছে, এমনকি প্রশাসনিক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করছে। এটা কি আমরা চেয়েছিলাম?” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা আছে, তাই আমি কখনো আন্দোলনকে পুঁজি করে অর্থ উপার্জনের চিন্তা করিনি।”
জুলাই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে উমামার পরামর্শ, “এখন শুধু ছাত্রদের জন্য নয়, সবাইকে সম্পৃক্ত করে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেয়ে বড় কিছু দরকার এখন।”
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “যারা জুলাই আন্দোলনকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছে, তারা আসলে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার পথই সুগম করছে।” উমামার এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যেখানে অনেকেই তার সমালোচনাকে যথার্থ বলে মন্তব্য করেছেন।