নিজস্ব প্রতিনিধি:
স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি করেছে ওষুধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে চলমান ‘উপহারের প্রতিযোগিতা’। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্য, বিদেশ ভ্রমণ, নগদ অর্থ থেকে শুরু করে পারিবারিক অনুষ্ঠানের খরচ বহন পর্যন্ত – নানাভাবে চিকিৎসকদের প্রলুব্ধ করছে ওষুধ কোম্পানিগুলো। এর ফলে রোগীদের পকেট কাটার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ জানান, এই ‘আক্রমনাত্মক মার্কেটিং’-এর কারণে ওষুধ উৎপাদন খরচ ৫০-৭০% বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সরাসরি ওষুধের দাম ও মানকে প্রভাবিত করছে। তিনি বলেন, “অখ্যাত কোম্পানিগুলো বেশি কমিশন দিচ্ছে, ফলে গ্রামাঞ্চলে নিম্নমানের ওষুধের ব্যবহার বাড়ছে।”
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা ডাক্তারদের কক্ষে অবাধে প্রবেশ করছেন এবং এসি, ফ্রিজ, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা পর্যন্ত করছেন। এমনকি নিউমার্কেট এলাকায় গড়ে উঠেছে ডাক্তারদের প্রাপ্ত উপহার সামগ্রী বিক্রির বিশেষ বাজার।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বীকার করেন, “এ ধরনের কার্যক্রম মেডিকেল নীতিবিদ্যার পরিপন্থী, কিন্তু আমাদের এটা বন্ধ করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেই।”
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে এই অনৈতিক চর্চা বন্ধে দুই মাসের অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে বৈঠক করা হবে। উল্লেখ্য, এই প্রতিযোগিতার কারণে গ্লাক্সো স্মিথ ক্লাইন ও স্যানোফির মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।