রুবেল ফরাজী, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের নগরকান্দার চর যশোরদী ইউনিয়নের জয় বাংলার মোড় এলাকায় ঘটলো নাটকীয় এক ঘটনা। একটি মাইক্রোবাসে থাকা ভুয়া র্যাব সদস্যদের ধাওয়া করছিলেন প্রকৃত র্যাব সদস্যরা। কিন্তু ঘটনাটি সাধারণ মানুষের চোখে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে—ফলে উভয় পক্ষকেই গণপিটুনির শিকার হতে হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জোরে হর্ন বাজিয়ে দ্রুতগতিতে একটি মাইক্রোবাস ছুটে গেলে সেটিকে অস্বাভাবিক মনে করে স্থানীয় লোকজন গাছ ফেলে থামান। গাড়ির আরোহীরা নিজেদের র্যাব পরিচয় দিলেও তাদের কারও গায়ে র্যাবের পোশাক ছিল না, যা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করে। তারা পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের আটকে মারধর শুরু করেন।
কিছুক্ষণ পর পেছনের আরেকটি মাইক্রোবাসে করে ঘটনাস্থলে আসে র্যাব-১০-এর প্রকৃত সদস্যরা। তবে তাদের বেশ কয়েকজন সাদাপোশাকে থাকায় স্থানীয়রা তাদেরও ভুয়া র্যাব ভেবে হামলা চালায়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও র্যাবের অন্য টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই পক্ষকে উদ্ধার করে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসআই আমীরুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তিদের থানায় এনে পরে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের সদস্যদের মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানায় পাঠানো হয়েছে।
র্যাব-১০ এর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ধৃত ব্যক্তিরা সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জে সোনা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডাকাতি করে পালাচ্ছিল। ধৃতরা হলেন শরীয়তপুরের স্বপন খান (৪৫), চাঁদপুরের মিন্টু গাজী (৪৫), গাইবান্ধার সাইফুল ইসলাম (৩০), মাদারীপুরের জামিল (৩২), এবং ফরিদপুরের দিদার হোসেন (২৯)।
র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার তারিকুল ইসলাম বলেন, “সাদাপোশাকে থাকা সদস্যদের প্রকৃত পরিচয় জনতা তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারেনি, ফলে ভুল বোঝাবুঝির কারণে র্যাব সদস্যরাও কিছুটা ক্ষতির শিকার হন।”
র্যাব-১০ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনোয়ার হোসেন জানান, “আমরা ডাকাত দলের পিছু নিয়েই যাচ্ছিলাম। তারা পদ্মা সেতু হয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে। জনগণ যখন ভুয়া র্যাবদের মারছিল, তখন তাদের প্রাণহানির আশঙ্কায় আমরা হস্তক্ষেপ করি। প্রথম পর্যায়ে জনগণ আমাদেরও ভুয়া ভাবায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, তবে তা বড় কিছু নয়।”
এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত প্রকৃত র্যাব সদস্যদের তৎপরতায় ডাকাতচক্রকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।