শাহাব উদ্দিন চৌধুরী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ শমসেরনগর বাজারে সম্প্রতি একের পর এক চুরির অভিযোগ ওঠায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক মাসে বাজারের অন্তত ৯ থেকে ১০টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
গত ২৮ জুলাই ২০২৫ সোমবার রাত ৯টার দিকে বাজারের একটি দোকানে চুরির ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীরা একটি শিশুকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে জানায়, “আমাকে মিলাদ বলছে যে দোকানে অনেক মাল আছে, চুরি করতে হবে।”
শিশুর এ স্বীকারোক্তিতে চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে উল্লেখিত মিলাদ মিয়া সবার সামনে আসলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাজার কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং পুলিশের সামনে বারবার এই তথ্য দেওয়ার পরও মিলাদ মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার পেল না স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শিশুর মুখে একাধিকবার নাম শোনার পরও পুলিশ কেবল শিশুটিকে থানায় নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেয় এবং মূল অভিযুক্ত মিলাদ মিয়াকে নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। একজন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, “শিশুকে দিয়ে আমাদের দোকান চুরি করতে বাধ্য করা হচ্ছে।”
ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ডাক
এ ঘটনার পর ব্যবসায়ীরা একত্রে মিলিত হয়ে প্রশাসনের প্রতি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, “আমরা যথেষ্ট সহ্য করেছি। দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনসহ গণপ্রতিবাদে নামবো।”
ব্যবসায়ীদের তিন দফা দাবি
ব্যবসায়ীরা তাদের দাবিসমূহ ঘোষণা করেছেন, যা নিম্নরূপ:
১. গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত মিলাদ মিয়া বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. চুরি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলোর যথাযথ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শিশুদের দিয়ে অপরাধ করানোর পেছনের মূল পরিকল্পনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
এমন অবস্থা চলতে থাকলে কমলগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ বেড়ে যেতে পারে, যা স্থানীয় শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা, যাতে শমসেরনগরে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক পথে চলতে পারে