মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কওমি তরুণ ওলামা পরিষদ। শুক্রবার (১ আগস্ট) বাদ জুম’আ জামিয়া ইসলামিয়া মুজাফ্ফারুল উলুম মুরাদনগর মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুরাদনগর ইসলামী চত্বরে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কওমি তরুণ ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি সাদিকুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন মাওলানা হাফেজ জাকারিয়া।
বক্তব্য রাখেন মাওলানা আব্দুর রহমান আল মুজাফফার, মুফতি মাহমুদ হাসান, মুফতি যোবায়ের সাইফুল্লাহসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, “সরকারের একজন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কার্যালয় স্থাপনকে ‘বাংলাদেশের স্বার্থে’ দাবি করলেও জাতির সামনে সেই স্বার্থ এখনও পরিষ্কার নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র যার নিজস্ব সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা ও মানবাধিকার কমিশন রয়েছে। ফলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের স্থায়ী উপস্থিতি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করবে, যা দেশের সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক ঐক্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।”
তারা আরও বলেন, “জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবমাননা। ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের শহীদদের রক্তের সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত বিশ্বাসঘাতকতা।”
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাতিল
২. সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার পরিচয় ও লিঙ্গ পরিবর্তন নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন
৩. ‘জঙ্গি নাটক’ ও ভিত্তিহীন মামলা বন্ধ
৪. পতিতাবৃত্তিকে বৈধ করার প্রচেষ্টা বন্ধ এবং দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা
৫. ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কমিশনার পরিষদের সদস্য মাওলানা নুরুজ্জামান, মুফতি রেজাউল্লাহ খান, মুফতি আবু মুসা, হাফেজ আবুল বাশার, মুফতি আবু ওসামা বেলাল, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, মাওলানা ওয়াহিদুজ্জামান, মুফতি আমানুল্লাহ, মুহাম্মদ নাজমুল হাসান আমজাদ, হাফেজ বাবুল, মুহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ।
বিক্ষোভ শেষে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণাও দেন বক্তারা।