৩রা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৯ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

আড়াইহাজারে ভাড়া চাওয়ায় বিএনপি নেতাদের হামলায় জাহাঙ্গীর হত্যা: পরিবার আতঙ্কে

নিজস্ব প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় জাহাঙ্গীর হোসেন নিহত হওয়ার পর তার পরিবার গভীর আতঙ্কে রয়েছে। নিহতের স্ত্রী সেলিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার স্বামীকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলে সেখানে থাকলে তাকেও মেরে ফেলত। আমরা এখনও হুমকির মধ্যে আছি। আমার স্বামীর হত্যার ন্যায়বিচার চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।”

৩০ জুলাই ঘটনাটি ঘটে যখন জাহাঙ্গীর হোসেন বিএনপি কার্যালয়ের ১০ মাসের বকেয়া ভাড়া চান। তার ছেলে রাসেল জানান, “তারা ভাড়া না দিয়ে বরং তোতা মেম্বারসহ কয়েকজন মিলে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করে। হাসপাতালে নেওয়ার পরও তারা লাশের ওপর আঘাত চালিয়েছে।”

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত

জাহাঙ্গীরের বড় ছেলে মো. রাসেল বলেন, ‘তারা (বিএনপি) গত ১০ মাস ধরে দোকান ভাড়া নিয়েছে। এখন পর্যন্ত এক টাকাও ভাড়া দেয়নি। তাই তাদেরকে গত তিন মাস ধরে দোকান ছেড়ে দিতে বলে আসছিলাম। কিন্তু তোতা মেম্বার ভাড়াও দিচ্ছিল না আবার দোকানও ছাড়ছিল না। ঘটনার দিন আমি আর আমার বাবা দোকানে কাজ করাচ্ছিলাম। বাবাকে দোকানে রেখে আমি কাজে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর শুনি তোতা মিয়াসহ তার লোকজন মিলে আমার আব্বাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। আমি তাড়াতাড়ি হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার বাবা আর নেই। আমি বাবার সঙ্গে থাকলে তারা আমাকেও মেরে ফেলতো। হাসপাতালে গিয়ে শুনেছি হাসপাতালেও নিয়েও তারা আমার বাবার মরদেহের ওপর আঘাত করেছে।’

ঘটনায় সেলিনা বেগমের করা মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৮-১০ অজ্ঞাত আসামিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত হাসেম নামে একজনের গ্রেফতার হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন, যাদের মধ্যে তোতা প্রধানও রয়েছেন।

এদিকে নিহতের মেয়ে নিলুফা আক্তার বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। ঘটনার পর বিএনপির পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাদেরকে কেউ সান্ত্বনা পর্যন্ত দিতে আসেনি। অথচ আমার বাবাও বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে যেতেন।’

ঘটনাস্থল সালমদী নয়াবাজারের দোকানগুলো তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা ভয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।

পুলিশের গ-সার্কেল এসএসপি মেহেদী ইসলাম জানান, বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top