৪ঠা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ঢাকাতে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে ঈশ্বরদী বিএনপির সংবাদ সম্মেলন

রিফাজ বিশ্বাস লালন, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি:

ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকারিয়া পিন্টুর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আওয়ামী দোসর জুবায়ের হোসেন বাপ্পি নামের এক বিতর্কিত ব্যক্তিকে দিয়ে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি মিলনায়তনে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যে প্রনোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং মানহানীকর সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করেছেন ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।

রোববার (৩ আগষ্ট)  সকালে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তারা। ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা ও ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের আহবায়ক মোঃ জাকির হোসেন জুয়েল।

লিখিত বক্তব্যে শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা ও জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, গত ৫ আগষ্ট পরবর্তী ও পূর্ববর্তী সময়ে ঈশ্বরদীতে সুষ্ঠু ধারার রাজনৈতিক চর্চা বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল। সৌহার্দ্যরে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছিলেন বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু। কিন্তু দূভার্গ্যরে বিষয় হলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাকারিয়া পিন্টু এমপি পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেই শুরু হয় বিপত্তি।

পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে জাকারিয়া পিন্টুর বিরুদ্ধে একের পর এক নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেন। বিভিন্ন টিভি টক-শো, আইন-শৃংঙ্খলা কমিটির সভা সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাকারিয়া পিন্টুর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যাচার ও কুৎসা রটাতে থাকেন। যা কারও অজানা নয়। এছাড়াও পদ্মা নদীর জলদস্যু ও নিষিদ্ধ আওয়ামীলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার কাঁকন বাহিনীর পক্ষ নিয়ে প্রকাশ্যেই পদ্মা নদীর বৈধ তড়িয়া মহলের ইজাদার এ.টি এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী কর্মী বান্ধব নেতা মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

পদ্মা নদী ও তীঁরবর্তী এলাকায় নিষিদ্ধ কাঁকন বাহিনীর একের পর হামলা ও গুলি বর্ষণের ঘটনাকে ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’র চেষ্টায় মত্ত হয়ে উঠেন হাবিবুর রহমান হাবিব। সম্প্রতি কাঁকন বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট পদ্মার চরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে কাঁকন বাহিনীর দুই সন্ত্রাসী, একাধিক অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ টাকাসহ বিভিন্ন নথিপত্র উদ্ধার করা হয়। যা দেশের সব সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সেই বিষয়টিকেও ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য টিভি টক-শোতে হাবিবুর রহমান হাবিব জোর চেষ্টা চালিয়ে দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। পদ্মা নদীর বালু উত্তোলনের বিতর্কিত ইজারাদার মোল্লা এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম মোল্লা। যিনি নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বাগাতিপাড়া উপজেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা-মামলার অন্যতম আসামী। তার পক্ষে অবস্থান নিতেও কার্পন্য বোধ করেননি হাবিবুর রহমান হাবিব।

লিখিত বক্তব্যে শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা ও জাকির হোসেন জুয়েল আরও বলেন, কোন ভাবেই যখন জাকারিয়া পিন্টুর জনপ্রিয়তা হ্রাস করা যাচ্ছে না ঠিক সেই সময় দাশুড়িয়ার শরিফুল ইসলাম তুহিনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে আওয়ামী দোসর বিতর্কিত জুবায়ের হোসেন বাপ্পি নামের এক বিতর্কিত ব্যক্তিকে সামনে দাঁড় করিয়ে সম্পূর্ণ্য মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত এবং মানহানীকর তথ্য সাজিয়ে সংবাদ সম্মেলনের নাটক সাজিয়েছেন। কথিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও বালু মহল দখলকারী উল্লেখ করা হয়েছে। যা শুধু মিথ্যাই নয়, চরম মানহানীকরও।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ঈশ্বরদীর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং বিএনপির পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথাকে সন্ত্রাসের গডফাদার উল্লেখ করায় তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা বলেন, আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা, সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ও আইকর দিয়ে ব্যবসা করে আসছি।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিগত দিনে কঠোর আন্দোলন-সংগ্রামে কি ভূমিকা পালন করেছি যা এই অঞ্চলের মানুষ জানে। বিএনপির প্রতিষ্ঠলগ্ন থেকেই দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্ব পালন করে ঈশ্বরদীতে বিএনপিকে সু-সংগঠিত করেছেন বলেও জানান তিনি। শামসুদ্দিন মালিথা আরও বলেন, বয়সে তরুন হলেও ঈশ্বরদীর ভঙ্গুর ও নেতৃত্ব শূণ্য বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে যে নেতা দ্বায়িত্বশীল ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সদস্য সচিব মেহেদী হাসান।

৫ আগষ্ট পূর্ববর্তী সময়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাষক বাহিনীর রক্ষ চক্ষু উপেক্ষা করে ঈশ্বরদীতে দূর্বার গণআন্দোলন তৈরি করেছিলেন তিনি। শুধু গণআন্দোলনই নয়; মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা-মামলায় সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তখন এই সমস্ত তথাকথিত আওয়ামী দোসর জুবায়ের হোসেন বাপ্পিরা কোথায় ছিলেন বলেও প্রশ্ন রাখেন।

তারা বলেন, ঈশ্বরদী শহরের বকুলের মোড় এলাকায় আবুল হোসেন এর ছেলে জুবায়ের হোসেন বাপ্পি বিগত ১৬ বছর পতিত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। কলেজ পাড়া, বকুলের মোড় ও মশুড়িয়া পাড়া এলাকার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে বিগত ১৬ বছর যোগ-সাজস আর সখ্যতা গড়ে তুলে এলাকায় দাপটের সাথে চলাফেরা করেছেন এই জুবায়ের হোসেন বাপ্পি।

এছাড়াও নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সন্ত্রাসী রাকিবুল হাসান রনি’র অন্যতম প্রধান অর্থ সহযোগী ছিলেন এই জুবায়ের হোসেন বাপ্পি। বাপ্পির বাবা বিদেশে থাকায় ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তৎকালীন এক এসপি’র পরিচয়ে এই জুবায়ের হোসেন বাপ্পি ও তার মায়ের অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ট ছিল। তাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর কর্মসূচী ও প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে তাদের ‘এক ঘরে’ করে রেখেছিল। যা সেই সময়কার অনেক সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top