নিজস্ব প্রতিনিধি:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার নতুন আশার আলো’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, “হাজারো শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগ যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পেয়ে দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, বিশেষ করে যুবক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের এই ঐতিহাসিক অর্জনের জন্য আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।” তিনি শহীদদের স্মরণ করে বলেন, “আমি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক ও আন্দোলনকারীদের স্মরণ করছি যারা ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছেন। আহত ও পঙ্গু হওয়া সকল যোদ্ধার অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।”
ইউনূস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এখনো দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।” তিনি নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও স্বৈরাচারবিহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের সব স্তরে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে, শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণ ও আহতদের পুনর্বাসনের কাজ চলমান। তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কার ও টেকসই সমাধানের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।”
ইউনূসের বাণীতে নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলা হয়, “আসুন আমরা সবাই মিলে এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে কোনো স্বৈরাচারের স্থান হবে না, যেখানে ন্যায় ও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে।”