৫ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১১ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

সীমান্তে বিএসএফের নৃশংস হত্যাকাণ্ড: বৈদ্যুতিক শক ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে মরদেহ নদীতে ফেলার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে একের পর এক বাংলাদেশি নাগরিক নৃশংসভাবে নিহত হচ্ছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি অন্তত তিনটি ঘটনায় বাংলাদেশিদের বৈদ্যুতিক শক ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

২০ জুলাই ভোররাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জহুরপুর বিওপি এলাকায় মোহাম্মদ লালচান (২৫) নামে এক যুবককে বিএসএফ আটক করে। পরে তাকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ১ আগস্ট রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলতলা ঘাট এলাকায় সৈয়বুর নামের আরেকজনের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পদ্মা থেকে উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ ২ আগস্ট মাসুদপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যার পর নদীতে ফেলা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিএসএফ সম্প্রতি তাদের হত্যার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। আগে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা হলেও এখন বৈদ্যুতিক শক, অ্যাসিড ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলা হচ্ছে। শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের বাসিন্দা আজিজুর রহমান বলেন, “এখন আর কাউকে গুলি করে মারছে না। অ্যাসিডে পুড়িয়ে, কুপিয়ে হত্যার পর নদীতে ফেলে দিচ্ছে।”

এ বিষয়ে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহদুম রিংকু বলেন, “মরদেহে আঘাতের চিহ্ন আছে। কিন্তু আইনি প্রক্রিয়া চালাতে স্বজনদের অভিযোগ প্রয়োজন। আমরা যোগাযোগ করেও সাড়া পাইনি।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সমির উদ্দিন বলেন, “ভারতীয়রা বিশেষ করে মুসলিমদের ওপর বেশি ক্ষিপ্ত। দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে বেশি নির্যাতন করা হয়েছে।”

অন্তর্বর্তী সরকারের ১১ মাসের শাসনামলে বিএসএফের হাতে কমপক্ষে ৩৪ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে জড়িত একটি চক্র সস্তায় গরু বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশিদের ধরে দিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিচ্ছে।

ফেসবুকে আমরা

মন্তব্য করুন

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

সর্বাাধিক পঠিত নিউজ

Scroll to Top